পাতা:রাশিয়ার চিঠি - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৯৩১).pdf/১৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
রাশিয়ার চিঠি

অসম্মান। কথায় কথায় তা’রা উপোসে মরে, উপরওয়ালাদের লাখি ঝাঁটা খেয়ে মরে-জীবনযাত্রার জন্য যত কিছু সুযোগ সুবিধে, সব-কিছুর থেকেই তা’রা বঞ্চিত। তা’রা সভ্যতার পিলসুজ, মাথায় প্রদীপ নিয়ে খাড়া দাড়িয়ে থাকে— উপরের সবাই আলো পায়, তাদের গা দিয়ে তেল গড়িয়ে পড়ে।

 আমি অনেক দিন এদের কথা ভেবেচি, মনে হ’য়েচে এর কোনো উপায় নেই। এক দল তলায় না থাকলে আরেক দল উপরে থাক্‌তে পারে না, অথচ উপরে থাকার দরকার আছে। উপরে না থাকলে নিতান্ত কাছের সীমার বাইরে কিছু দেখা যায় না;—কেবলমাত্র জীবিকানির্বাহ করার জন্তে তো মনুষ্যত্ব নয়। একান্ত জীবিকাকে অতিক্রম ক’রে তবেই তা’র সভ্যতা। সভ্যতার সমস্ত শ্রেষ্ঠ ফসল অবকাশের ক্ষেত্রে ফ’লেচে। মানুষের সভ্যতায় এক অংশে অবকাশ রক্ষা করার দরকার আছে। তাই ভাবতুম, যে-সব মানুষ শুধু অবস্থার গতিকে নয়, শরীর-মনের গতিকে নীচের তলায় কাজ ক’র্‌তে বাধ্য এবং সেই কাজেরই যোগ্য, যথাসম্ভব তাদের শিক্ষা স্বাস্থ্য সুখ সুবিধার জন্যে চেষ্টা করা উচিত।

 মুস্কিল এই, দয়া ক’রে কোনো! স্থায়ী জিনিষ