পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
প্রথম পরিচ্ছেদ
১২১

দেখিবার জন্য তাঁহার আগ্রহ হইল। যদি এখনও তাহার দেহে প্রাণ থাকে, তাহা হইলে তাহার প্রাণরক্ষা করা একান্ত কর্ত্তব্য স্থির করিয়া কাপ্তেন জাহাজ থামাইবার আদেশ দিলেন। জাহাজ থামিলে কয়েক জন নাবিককে ‘জলি বোটে’ সমুদ্রে নামাইয়া দেওয়া হইল।

 প্রায় এক ঘণ্টা পরে নাবিকেরা স্মিথের নিস্পন্দ দেহ ‘জলি বোটে’ তুলিয়া জাহাজে প্রত্যাগমন করিল।

 কাপ্তেন মাষ্টার্শ দেখিলেন, যুবকের চেতনা নাই, প্রাণ আছে। কি না সন্দেহ! তিনি আর মুহুর্ত্ত কাল নষ্ট না করিয়া সহযোগী— গণের সহিত স্মিথের সংজ্ঞা-সঞ্চারের চেষ্টা করিতে লাগিলেন। দীর্ঘ কালের চেষ্টার পর স্মিথের বক্ষের স্পন্দন অনুভূত হইল। ক্রমে জীবনের লক্ষণ প্রকাশ পাইলে, কাপ্তেন স্মিথের নিকট হইতে উঠিলেন; অনুচরদের বলিলেন, “ইহাকে তুলিয়া আমার কেবিনে লইয়া যাও; আমার শয্যার পার্শ্বে একটি শয্যা প্রস্তুত করিয়া: তাহাতে ই হাকে শয়ন করাও।—আমি উহার পরিচর্যার ভার লইলাম। আর কয়েক মিনিট বিলম্ব হইলে বেচারাকে আর বাঁচাইতেও পারিতাম না।”

 এতক্ষণ পরে লাইফ-বেণ্টটির দিকে তাঁহার দৃষ্টি আকৃষ্ট হইল; তিনি দেখিলেন, লাইফ-বেল্টের গাত্রে মোটা মোটা কালো হরফে লিখিত আছে, “ওরিনকো!”

 কাপ্তেন অস্ফুট স্বরে বলিলেন, “ওরিনকো!—ইহা দক্ষিণ আমেরিকার সদাগরী জাহাজ।, এই যুবক সেই জাহাজের আরোহী ছিল বুঝিলাম, কিন্তু সমুদ্রে পড়িল কিরূপে? ওরিনকো ডুবিয়া যায় নাই ত?—এখন আমি করি কি? কেপ টাউনে পঁহুছিবার পূর্ব্বে