পাতা:রূপসী বোম্বেটে - দীনেন্দ্রকুমার রায়.pdf/৯৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮৮
রূপসী বোম্বেটে

জ্বলিতেছিল, তাহাতে বোধ হইতেছিল কক্ষটি বিদ্যুলোকে উদ্ভাসিত। সেই আলোক প্রাচীর-গাত্রস্থ চাকচিক্যময় চীনাংশুকে প্রতিফলিত হইয়া তাঁহার নয়নের বিভ্রম উৎপাদন করিতে লাগিল।

 সেই কক্ষে একখানি চেয়ারে একটি বৃদ্ধ বসিয়াছিল, তাহায় বর্ণ পীতাভ; তাহাকে দেখিলে দক্ষিণ আমেরিকার লোক বলিয়া মনে হয় না, মনে হয় সে চীন দেশের লোক,—কোনও চীনাম্যানের বংশধর। তাহার পরিধানে পীতবর্ণের জমকালো পরিচ্ছদ। লোকটি একটি সুবৃহৎ গড়গড়ায় ধূমপান করিতেছিল; তাহার চক্ষু দু’টি গোলাকার, ক্ষুদ্র তাহা অক্ষিকোটরে প্রবিষ্ট। মুখ দেখিয়া লোকটিকে সুপণ্ডিত ও তত্ত্বজ্ঞ বলিয়াই বোধ হয়; মুখের ভাব সম্পূর্ণ নির্ব্বিকার।

 মিঃ ব্লেক তাহার সম্মুখে আসিয়া তাহাকে সসম্ভ্রমে অভিবাদন কবিলেন; লোকটি গড়গড়ার নল মুখ হইতে নামাইয়া মিঃ ব্লেককে একখানি চেয়ারে বসিবার জন্য ইঙ্গিত করিল; তাহার পর কাশির মত খন্‌খনে আওয়াজে বলিল, “অনেক কাল পরে তুমি এদেশে আসিয়াছ।”

 মিঃ ব্লেক সবিনয়ে বলিলেন,“হাঁ, সর্ব্বজ্ঞ, আমি পাঁচ বৎসর পরে এদেশে আসিয়াছি।”

 বৃদ্ধ বলিল, “তোমার এখন সময় ভাল, তুমি কাজে হাত দিতেছ তাহাতেই কৃতকার্য্য হইতেছ। শুভগ্রহ তোমার” সকল অকল্যাণ নষ্ট করিতেছে।—তোমার মঙ্গল হউক।”

 মিঃ ব্লেক বলিলেন, “আমার ক্ষমতা অক্ষমতা আপনার ত অবিদিত নহে।”