পাতা:রেখা-দীনেশচন্দ্র সেন.djvu/১২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রেখা । & কিছুই নহে। যদি বল, একটা অণুর প্রতি অবিচার হইতেছে, আমি বলিব, এক ব্ৰহ্মাণ্ডের উপর অবিচার হইতেছে। কারণ, স্বক্ষ চক্ষে দেখিলে বুঝিবে, এই একটা অণুই একটা ব্ৰহ্মাও । যদি বল, অন্ধ যে চক্ষুষ্মান নহে, বন্ধ্যার যে সস্তান হয় না, বিধবা যে স্বামিহীনা—এ গুলি তাহদের কোন কষ্টের কারণ নহে। অন্ধকারে রজ্জ্বকে সর্পভ্ৰম করিয়া তাহারা কষ্ট পাইতেছে মাত্ৰ— প্রকৃতপক্ষে এ গুলি কণ্ঠ নহে। কিন্তু এ কথা আমরা মানি না। এইরূপ বলিলে, হ্যায়, দয়া প্রভৃতি সমস্ত কথাই অভিধান হইতে মুছিয়া ফেলিতে হয়--দুঃখ যদি দুঃখ না হয়, তবে হ্যায় বা দয়ার ক্ষেত্র কোথায় থাকে ? বিশ্বরাজ্যে সৰ্ব্বত্র ন্যায়ে ও দয়ার, জ্ঞানে ও প্রেমে, যে অপুর্ব মিলন রহিয়াছে, তাহা জন্মান্তর না মানিয়া বুঝাইয়া দেও—শুধু এই জন্ম দিয়া বুঝিয়া দেও, তবে মানিব। যদি বল, তোমার পিতার অপরাধে তুমি দুৰ্ব্বল হইয়াছ, তোমার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা-সম্বন্ধীয় সমস্ত অবনতির জন্য তোমার পিতা কি পূৰ্ব্বপুরুষবর্গকে দোষী সাব্যস্ত কর ;–তাহ হইলেও, সে কথার আংশিক সত্য স্বীকার করিলেও, তাহা সম্পূর্ণ সত্য বলিয়া স্বীকার করা যাইতে পারে না। বহির্জাগতিক নিয়ম দিয়া বুঝিলাম ও মানিলাম যে, পিতা দুৰ্ব্বল ও বুদ্ধিশূন্ত হইলে—পিতা ধনী কি নির্ধন হইলে, পুত্রও তদনুরূপ হইবে । কিন্তু নৈতিক নিয়ম দিয়া বুঝিতে চাহিলে এখানে অত্যন্ত বৈসাদৃশু দেখা যাইবে। পিতার দোষের জন্য নৈতিক নিয়মানুসারে পুত্র দায়ী হইতে পারে না। এখানে ঈশ্বরের ন্যায়-স্বরূপত্ব কিরূপে দেখিব ? বহিজাগতিক নিয়মের সঙ্গে এখানে নৈতিক নিয়মের ঐক্য হইল না ।