পাতা:রোগশয্যায়-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৩৬

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
রােগশয্যায়

২১

সকালে জাগিয়া উঠি’
ফুলদানে দেখিনু গোলাপ,
প্রশ্ন এল মনে
যুগ-যুগাস্তের আবর্তনে
সৌন্দর্যের পরিণামে যে শক্তি তোমারে আনিয়াছে
অপূর্ণের কুৎসিতের প্রতি পদে পীড়ন এড়ায়ে
সে কি অন্ধ সে কি অন্যমনা,
সেও কি বৈরাগ্যব্রতী সন্ন্যাসীর মতো
সুন্দরে ও অসুন্দরে ভেদ নাহি করে,
শুধু জ্ঞানক্রিয়া শুধু বলক্রিয়া তার
বোধের নাইকো কোনো কাজ?
কা’রা তর্ক ক’রে বলে,— সৃষ্টির সভায়
সুশ্রী কুশ্রী বসে আছে সমান আসনে,
প্রহরীর কোনো বাধা নাই।
আমি কবি তর্ক নাহি জানি,
এ বিশ্বেরে দেখি তার সমগ্র স্বরূপে,
লক্ষ কোটি গ্রহতারা আকাশে আকাশে
বহন করিয়া চলে প্রকাণ্ড সুষমা,
ছন্দ নাহি ভাঙে তার সুর নাহি বাধে,
বিকৃতি না ঘটায় স্খলন,
ঐ তো আকাশে দেখি স্তরে স্তরে পাপড়ি মেলিয়া
জ্যোতির্ময় বিরাট গোলাপ॥

উদয়ন
২৪ নভেম্বর, ১৯৪০
প্রাতে