পাতা:রোমিও-জুলিয়েত - হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভূমিকা। এই পুস্তক-থানি, সেক্ষপিয়রের “রোমিও-জুলিয়েট” নামক নাটকের ছায় মাত্র, তাহার অনুবাদ নহে। বাঙ্গালা ও ইংরাজি ভাষায় প্রকৃতি-গত এত প্রভেদ যে, কোনও একখানি ইংরাজি নাটকের কেবল অনুবাদ করিলে, তাহাতে কাব্যের রস কি মাধুৰ্য্য কিছুই থাকে না, এবং দেশাচার, লোকাচার ও ধৰ্ম্মভাবাদির বিভিন্নতা-প্রযুক্ত, এরূপ শ্রুতিকঠোর ও দৃপ্ত কঠোর হয় যে, তাহ বাঙ্গালী পাঠক ও দর্শকদিগের পক্ষে একেবারে অরুচিকর হইয় উঠে। সেই জন্য আমি রোমিও-জুলিয়েটের কেবল ছায়ামাত্র অবলম্বন করিয়া এই নাটক খানি প্রকাশ করিলাম । মূলের কোন কোনও স্থান পরিত্যাগ বা পরিবষ্ঠিত করিয়া লইয়াছি, কোথাও দু একটা নূতন গর্ভাঙ্কও সন্নিবেশিত করিতে হইয়াছে। স্ত্রী পুরুষদিগের নাম ও কথাবাৰ্ত্ত দেশীয় করিয়া লইয়াছি, কিন্তু প্রধান প্রধান নায়ক নায়িকগণ ও তাহাঙ্গের চিত্ত বা চরিত্রগত ভাব, মূলে যেখানে যেরূপ আছে, সেইরূপই রাখিতে যতদূর সাধ্য, চেষ্টা করিয়াছি। ফলতঃ সেক্ষপিয়রের নাটকের গন্ধের, ও তা হার প্রধান প্রধান নায়ক নায়িকদিগের চরিত্রের সারাংশ লইয়া, তাহ দেশীয় ছাঁচে ঢালিয়া, স্বদেশীয় পাঠকের রুচিসঙ্গত করিবার প্রয়াস পাইয়াছি। কতদূর কৃতকাৰ্য্য হইয়াছি, বলিতে পারি না তবে আমার ধারণ এই যে, এইরূপ কোনও প্রণালী অবলম্বন না করিলে, কোনও বিদেশীয় নাটক, বাঙ্গালী সাহিত্যে স্থান লাভ করিতে পরিবে না, এবং তাছা না হইলেও বাঙ্গালা সাহিত্যের সম্পূর্ণ পুষ্টলাভ ও প্রকৃতিগতু উন্নতি হইব না । এইরূপ করিতে করিতে, ক্রমশ: বিদেশীয় নাটক কবিতাদির অবিকল অনুবাদ বাঙ্গালা সাহিত্যে স্থান পাইবার উপযোগী হইতে পারে, কিন্তু আপাতত: কিছুকাল এই প্রণালী অনুসরণ করা অপরিহার্য্য বলিয়াই আমার ধারণা ।