পাতা:লণ্ডনে স্বামী বিবেকানন্দ - মহেন্দ্রনাথ দত্ত.pdf/১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
লণ্ডনে বিবেকানন্দ

লাগিলেন, “মাদ্রাজের যে স্বামীজীকে দেখিয়াছি তিনি এব্যক্তি নন, এবং যাঁহার আমি তামাক সাজিতাম এবং যিনি আমার সঙ্গে হাসি তামাসা করিতেন তিনিও এব্যক্তি নন; ইঁহার ভিতর এখন অনেক শক্তি জাগ্রত হইয়া উঠিয়াছে, এখন যেন সম্মুখে যাইতে বা কথা কহিতে ভয় করে। ইচ্ছা করিয়া নিজে নিম্নস্তরে আসিয়া কথা না কহিলে অপরের কথা কহিতে সাহস হয় না। এক্ষণে যৌগিক শক্তি নানা প্রকার বর্ধিত হইয়াছে,“—এরূপ বলিতে বলিতে মেননের কাফি খাইতে ইচ্ছা হইল, এবং দুজনে একটী প্রথম শ্রেণীর কাফির দোকানে প্রবেশ করিলেন।

 ভারতবাসীরা বিদেশের যাহা কিছু গল্প পান, অধিকাংশ স্থলে কাটা-ছাঁটা শুষ্ক কয়েকটী ভাবমাত্র, কিন্তু সেখানকার আচার-ব্যবহার, রীতিনীতি প্রভৃতি অনেকের জানিতে কৌতুহল হইয়া থাকে। এস্থলে যদিও গল্পগুলি অপ্রাসঙ্গিক, কিন্তু মাঝে মাঝে হাসি তামাসা না দিলে পাঠকের ধৈর্য্যচ্যুতি হইতে পারে এই জন্য মাঝে মাঝে নানা রকম উপাখ্যান প্রদত্ত হইল।

 ভিক্টোরিয়া ষ্টেশনের সন্নিকটে একটি প্রথম শ্রেণীর কফি হাউস বা চা’র দোকান ছিল। বসন্ত বা গরমের প্রারম্ভ, এইজন্য রাস্তার ধারের দোকান গুলিতে Oyster (কাঁকড়া) গলদা চিংড়ি ও কুঁচো চিংড়ি বিক্রয়ার্থ রহিয়াছে। Oyster আমাদের বাংলা দেশে ঝিনুক যে রকম লম্বা লম্বা হয় সে প্রকার নয়। যেরূপ পুরীধামে সমুদ্রে এক ইঞ্চি পরিমাণ গোল গোল ঝিনুক হয়, ইহা সেই জাতীয়। oysterএর খোসার মাঝখানে সাদাতে-হল‍্দেতে মিশানো হড়‍্হড়ে নালের মত এক প্রকার শাস হয়, সেই হড়্হড়ে নালের শাঁসটা চামচে দিয়া সুরুৎ সুরুৎ করিয়া খাইতে থাকে কিন্তু ইহা শুনিয়া এতদ্দেশীয় লোকের ঘৃণা হইবে। ইংলণ্ডবাসীরা এই Oysterকে পরম উপাদেয় বলিয়া গণ্য করে। আমাদের দেশে যেমন ছোট ছোট গুগলি, ইংরাজ দেশে সেইরূপ ছোট ছোট গুগলি