পাতা:লালন শাহ ও লালন গীতিকা.djvu/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

[ ] এ-ঘটনায় লালন শাহ বেশ আঘাত পেলেন মনে, কিন্তু মুখে কিছু বললেন না । এর পর এক ঘটনা ঘটলো । বিস্মিত পণ্ডিত-সমাজ দেখতে পেলেন, তাদের উপেক্ষিত যবন ( লালন ) ব্যক্তি সকলের সংগেই খেতে ব’সেছেন। শুধু তাই নয়, প্রত্যেক পণ্ডিতই অনুভব করতে লাগলেন যে, লালন তারই সংগে বসেছেন। পণ্ডিত সমাজ তাদের ভুল বুঝতে পারে— “তখনি সকলে মিলে গৌরধ্বনি করে । করজোড়ে নত শিরে দুটি পদ ধরে । মিনতি করিয়া কঁাদে দয়াল গোসাই । মোদের ছলিতে এলে মোরা দেখি নাই । ক্ষমা কর দীনবন্ধু পাতকী জনারে । গড়াগড়ি যায় আর এমত ফুকারে ।” এ যে ভক্তের অতিশয়োক্তি, তাতে কোন সন্দেহ নেই। তবে দুদ, শাহ এই ঘটনার প্রত্যক্ষদশী ব্যক্তি নন, তার শোনা কথা । এই ধরনের পীরের কারামতীর কথা আমাদের মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যেও বিরল নয় । শ্রীচৈতন্য ভক্ত-চরিত গ্রন্থগুলিতে এর ভূরি ভূরি দৃষ্টান্ত রয়েছে । তাযকিরাতুল আউলিয়। বা তাপস-কাহিনীতেও অনুরূপ কাহিনীর অভাব নেই । দুদ, শাহও এই হিসেবে সাহিত্যিক ঐতিহ্য অনুসরণ করেছেন। তবে তার কাহিনী অতিরঞ্জিত হ’লেও মূলতঃ সত্য-ভিত্তিক, তাই তার ঐতিহাসিক মূল্যও অত্যধিক । শুধু তাই নয়, লালন-জীবনীকে কেন্দ্র ক'রে এ-যাবত যত গল্প-কাহিনী ও কিংবদন্তী গড়ে উঠেছে, তা থেকে সত্য উদ্ধারের একমাত্র মানদণ্ড আলোচ্য "জীবন-চরিত’ খানি, এ-কথা বলাই বাহুল্য । যথাস্থানে সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে । . উক্ত গ্রন্থ থেকে আমরা শুধু লালন-জীবনীর সঠিক সুত্রই পাই নি, তার জীবন-কাহিনীর বিভিন্ন সমস্তার সমাধান, র্তার জীবন-দর্শন, র্তার মত ও পথেরও যথার্থ ইশারা পেয়েছি - ২ দুদ, শাহের বিবরনীটি যশোরের আবদুল লতীফ আফি আনহু ংগৃহীত ।