পাতা:লিঙ্গপুরাণ (পঞ্চানন তর্করত্ন).pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

পূৰ্ব্বভাগ i বোধ হইতেছে, যেন সাক্ষাং তেজোরাশি সকল দিকৃ ও স্বৰ্গ আঁসিয়া এই দিকেই আগমন করিতেছে। ভগবান বিষ্ণু তৎকর্তৃক এইরূপ অভিহির্ত হইয়া ব্ৰহ্মাকে বলিলেন । ৪১-৬২ যাহার মহং বেগ সহকারে পদতল-নিপাতে আকাশমণ্ডলে জলভরাবনত জলধর সকল উত্থিত হইয়াছে। পদ্মসস্তব ! তুমি বিশ্বসাধ্য অত্যন্ত স্কুলজলে সিক্ত হইবে। প্ৰাণজবায়ু দ্বারা কম্পমান মদীয় নাভিজাত স্বচ্ছ এই পদ্ম তোমার সহিত কল্পিত ও উত্তপ্ত হইবে। আপনি অনাদি অন্তকুং ও প্রভু আপনি ঈশ্বর এইখানেই উপস্থিত আছেন। আপনি ও আমি স্তোত্রদ্ধার মহাদেবের উপাসনা করিব। অনস্তর ব্রহ্মা ক্রুদ্ধ হইয়৷ পদ্মলোচনকে কহিলেন “ত্রিলোকপ্রভু আত্মাকে জান ন৷ এবং আমি ব্ৰহ্মা তাহাও জান না ? এই শঙ্কর কে ? ইনি আমাদের উভয়ের অতিরিক্ত। তাহার ক্রোধজনিত বাক্য শ্রবণ করিয়া নারায়ণ কহিতে লাগিলেন হে কল্যাণময়! আমার নিকট মহাত্মা শিবের নিন্দ করিও না ; তিনি মহাযোগেন্ধন, সাক্ষাং ধৰ্ম্ম ও বরদাতা এবং এই জগতের হেতু; তিনি পুরাণপুরুষ ও অব্যয় তিনি সাক্ষাৎ কারণ অন্ত সকল বীজ স্বরূপ উহার সাধ্য তিনি একমাত্র জোতীরূপ পরে সেই বিভু শঙ্কর বালক্রীড়নবং স্বষ্টিস্থিতি ও লয়াত্মক ক্রীড়া করিয়া থাকেন। তিনিই প্রধান ও প্রকৃতি। তিনিই অব্যক্ত ও তম। যদি পুনরায় বল ইনি কে ? তাহ হইলে যাহাকে তুমি দর্শন করিলে তিনিই সেই পুরুষ জন্মমরণাদি দুঃখদর্শনে বিরক্ত যতিগণ কেবল র্তাহাকে দেখিয়া থাকেন। এই পুরুষই বীজবান্‌ আপনি বীজ আমি যোনি ও সনাতন । বিশ্বাত্মা ব্ৰহ্মা বিষ্ণু কর্তৃক এইরূপ অভিহিত হইয়া বিষ্ণুকে জিজ্ঞাসা করিলেন। আপনি যোনি আমি বীজ মহেশ্বর বীজবান্‌ এই বিষয়ে আমার বড়ই সংশয় বোধ হইতেছে, আমার সংশয়চ্ছেদ করিতে তুমিই যোগ্য। লোকবিধাতা ব্ৰহ্মার বিবিধ প্রাচুর্ভাব জানিতে পারিয়া ভগবান্‌ হরি, অত্যন্ত অসদৃশ প্রশ্নের উত্তর করিলেন। ইহা হইতে মহত্তর অন্ত আর গোপনীয় নাই। মহত্তত্ত্বের পরম ধাম জ্ঞানিগণের গম্য জানিবে। আত্মা দুই প্রকার নিগুণ ও সগুণ, ইহার মধ্যে নিষ্কল অর্থাৎ নিৰ্গুণ আত্মা অব্যক্ত ; সগুণ আত্মা মহেশ্বর। ৬৩-৭৭ ৷ তুমি অগম্য গহন ও মায়াবিধিজ্ঞ মহেশ্বরের লিঙ্গোৎপন্ন প্রথম বীজ পূৰ্ব্বকালে তৎস্বরূপ বীজ আমার ধোনিতে যুক্ত করিয়া কালপর্যায়ে সেই বীজ আমার ষোণিতে হিরন্ময় অণ্ডক্ষপে প্রমিয়াছিল। সেই জও সহস্র . বৎসর ব্যাপিয় জলমধ্যে প্রতিষ্ঠিত ছিল। সহস্ৰ বৎসরান্তে সেই অও দ্বিধাকৃত হইল। এক খণ্ড কপালে স্বৰ্গরূপে পরিণত হইল, অপর খণ্ড পৃথিবী হইল ; সেই অণ্ডের উন্থ (গর্ভের আবরণ) অত্যন্ত কনকপৰ্ব্বত ; ইহাকে স্বমেরু পৰ্ব্বত কহে, অনম্ভর সেই মগু হইতে উংপদ্যমান শরীর দেবদেৰ বিশ্বপ্ৰভু ভগবান হিরণ্যগৰ্ভ জগতে তারা, ইন্দু, নক্ষত্ৰ পৰ্য্যস্ত ন৷ দেঞ্ছি পাইয়া আমি কে ? এইরূপ চিন্তা করিলে, সেইকালে প্রিয়দর্শন যত্বশীল ও যতিগণের পূৰ্ব্বে সমুৎপন্ন তোমার কুমারগণ উৎপন্ন হুইল । সহস্ৰ বৎসরান্তে পুনরায় তোমার সেই সকল আত্মজগণ এক কালে উৎপন্ন হইবে ; তাহারা ভুবনদহনসমর্থ অনলবৎ তেজস্বী, পদ্মপত্রের ন্তায় আয়ত-লোচন, প্রতিভাশালী, পরমাণুবং অপ্রত্যক্ষদর্শন জগতের স্থিতি, কারণ। র্তাহাদিগের নাম শ্ৰীমৎ সনৎকুমার ও ঋভু ; ইহঁরা দুই জনে উৰ্দ্ধরেত। সনক, সনাতন, সনন্দন ইহারা তাপত্ৰয়বর্জিত বলিয়া কৰ্ম্মাদি করিলেন না। যাহাতে বহু ক্লেশ ও অল্প সুখ আছে ; সেই জরাশোকসমন্বিত জীবন মরণ ও পুনঃপুনঃ উৎপত্তি আর স্বর্গে অল্পই সুখ নরকে বহুতর দুঃখ এবং সকল আগম ও অবগু ভবিতব্যত এই সমস্ত জ্ঞাত হইয়া তোমার বাসস্থিত স্কৃভু ও সনৎকুমারকে দর্শনপূর্বক অতি তেজস্বী তোমার আত্মজ সনকাক্ষিত্রয় গুণত্রয় পরিহার পুৰ্ব্বক আধ্যাত্মিক জ্ঞানে মতি প্রদানে উদ্যোগী, ੇਸ਼ਕ। অনন্তর, সনকাদিত্ৰয় আধ্যাত্মিক জ্ঞানে প্রবৃত্ত হইলে শঙ্করের মায়ায় তুমি বিমূঢ় হইবে। হে অনঘ! এইরূপ কল্পে প্রবৃত্ত হইলেই, তোমার সংজ্ঞ নষ্ট হইবে। প্রবৃত্তকল্পে অবখিঃ হুহ্ম ও পার্থিব প্রাণিসকলের ঐশ্বরী মায় "জাগৃতি” এই নামে খ্যাত হইবে। যেমন এই সুমেরুপৰ্ব্বত দেবগণের আশ্রয় বলিয়া, উদাহৃত হয় ; তদ্রুপ দেবদেব মহেশ্বরের মাহাত্ম্যও জানিবে। ঈশ্বর সম্ভাব ও আমাকে অম্বুজেক্ষণ এইরূপে জ্ঞাত হইয়া জীবগণের বরদাতা ও প্রভু মহাভূত জগদগুরু মহাদেবকে প্রণবযুক্ত বেদোক্ত মন্ত্রদ্বারা নমস্কার করির উঠবে ; নচেৎ তিনি ক্রুদ্ধ হইয়া তোমাকে ও আমাকে নিশ্বাস দ্বারা দগ্ধ .করবেন। তাহার এই প্রকার মহাযোগ ও মহাবল জানিতে পারিয়া আমি উত্থান করত তোমাকে অগ্নে করিয়া অমরঞ্জঙ দেবকে স্তব করিব ॥ ৭৮-১৭ ॥ বিংশ অধ্যায় সমাপ্ত ॥