অস্পষ্ট ቖፃ তারপর দেখা যায় জানলার ছেদগুলির মধ্যে দিয়ে ওর প্রতিদিনের কাজের ধারা । কোলের কাছে ধাম৷ নিয়ে ডাল-বাছ ; জাতি হাতে স্থপুরি কাটা ; স্নানের পরে বা হাত দিয়ে নেড়ে নেড়ে ভিজে চুল শুকোনো ; বারান্দার রেলিঙের উপরে বালাপোষ রোদরে মেলে দেওয়া । দুপুরবেলায় পুরুষের আপিসে ; মেয়ের কেউ বা ঘুমোয়, কেউ বা তাস খেলে ; ছাতে পায়রার খোপে পায়রাদের বক্বকম মিইয়ে আসে। সেই সময়ে মেয়েটি ছাতের চীলে-কোঠায় পা-মেলে বই পড়ে, কোনো দিন বা বইয়ের উপর কাগজ রেখে চিঠি লেখে, আর্বাধ। চুল কপালের উপরে থমকে থাকে, আর আঙল যেন চলতে চলতে চিঠির কানে কানে কথা কয়। একদিন বাধা পড়ল। সেদিন সে খানিকটা লিখচে চিঠি, খানিকট খেলচে কলম নিয়ে, আর আলসের উপরে একটা কাক অাধ-খাওয়া আমের আঁঠি ঠুকরে ঠুকরে খাচ্চে । এমন সময়ে যেন পঞ্চমীর অন্তমনা চাদের কণার পিছনে পা টিপে টিপে একটা মোট মেঘ এসে দাড়াল । মেয়েটি আধাবয়সী। তার মোটা হাতে মোটা কাকন। তার সামনের চুল ফাক, সেখানে সিথির জায়গায় মোট সিদুর আঁকা।
পাতা:লিপিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১১৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।