অস্পষ্ট వివి সেদিন বনমালী নীচে গিয়েই চিঠি লিখলে। লিখেই নিজে গিয়ে তখনি ডাকবাক্সে ফেলে দিয়ে এল। রাত্রে বিছানায় শুয়ে শুয়ে একমনে কামনা করতে লাগল সে চিঠি যেন না পৌছয়। সকালবেলায় উঠে সেই বাড়ির দিকে যেন মুখ তুলে চাইতে পারলে না। সেই দিনই বনমালী মধুপুরে চলে গেল, কোথায় গেল কাউকে বলে গেল না। কলেজ খোলবার সময় সময় ফিরে এল। তখন সন্ধ্যাবেলা। সামনের বাড়ির আগাগোড়া সব ৰন্ধ, সব অন্ধকার । ওরা সব গেল কোথায় ! বনমালী বলে উঠল, “যাক, ভালই হয়েচে !” ঘরে ঢুকে দেখে ডেস্কের উপরে একরাশ চিঠি। সব নীচের চিঠির শিরোনাম মেয়েলি হাতের ছাদে লেখা, অজানা হাতের অক্ষরে, তাতে পাড়ার পোষ্টঅাপিসের ছাপ । চিঠিখানি হাতে করে সে বসে রইল। লেফাফা খুললে না। কেবল আলোর সামনে তুলে ধরে দেখলে। জানালার ভিতর দিয়ে জীবনযাত্রার যেমন অস্পষ্ট ছবি, আবরণের ভিতর দিয়ে তেমনি অস্পষ্ট অক্ষর । একবার খুলতে গেল, তারপরে স্বাক্সের মধ্যে চিঠিটা রেখে চাবি বন্ধ করে দিলে ; শপথ করে ৰঙ্গলে- “এ চিঠি কোনো দিন খুলৰ লা।”
পাতা:লিপিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১১৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।