ᎩᏬo লিপিক আমি বললেম, “নিজের মধ্যে মানুষের প্রাণটা নানা ভাবনায় ঘোলা হয়ে গেচে । তাই প্রাণের বিশুদ্ধ রূপটি দেখতে হ’লে চাইতে হয় ঐ ঘাসের দিকে ঐ গাছের দিকে ।” —“কি রকম দেখলে ?” —“দেখ লেম, এই প্রাণের আপনাতে আপনার কি আনন্দ ! নিজেকে নিয়ে পাতায় পাতায়, ফুলে ফুলে, ফলে ফলে, কত যত্নে সে কত ছাটই ছেটেচে, কত রঙই লাগিয়েচে, কত গন্ধ, কত রস ! তাই ঐ বটের দিকে তাকিয়ে নীরবে বলছিলেম, ‘ওগো বনস্পতি, জন্মমাত্রই পৃথিবীতে প্রথম প্রাণ যে-আনন্দধ্বনি করে’ উঠেছিল সেই ধ্বনি তোমার শাখায় শাখায় । সেই আদি যুগের সরল হাসিটি তোমার পাতায় পাতায় ঝলমল করচে। আমার মধ্যে সেই প্রথম প্রাণ আজ চঞ্চল হ’ল। ভাবনার বেড়ার মধ্যে সে বন্দী হয়ে বসে ছিল, তুমি তাকে ডাক দিয়ে বলেচ, ওরে আয় না রে আলোর মধ্যে, হাওয়ার মধ্যে ; আর আমারি মত নিয়ে আয় তোর রূপের তুলি, রঙের বাটি, রসের পেয়াল৷ ” মন আমার খানিকক্ষণ চুপ করে রইল। তারপরে কিছু বিমর্ষ হয়ে বললে, “তুমি ঐ প্রাণের কথাটাই নিয়ে কিছু বাড়াবাড়ি করে থাক, আমি যেসব উপকরণ
পাতা:লিপিকা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/১৭৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।