তার পরে দুয়োরাণীর কথা আমার মনেই রইল না।
তারপরে একদিন দোলযাত্রা। নাটমন্দিরে যাচ্চি ময়ূরপংখী চড়ে। আগে লোক, পিছে লশকর। ডাইনে বাজে বাঁশি, বাঁয়ে বাজে মৃদঙ্গ।
এমন সময় পথের পাশে নদীর ধারে ঘাটের উপরটিতে দেখি একখানি কুঁড়ে ঘর, চাঁপা গাছের ছায়ায়। বেড়া বেয়ে অপরাজিতার ফুল ফুটেচে, দুয়োরের সাম্নে চালের গুড়ো দিয়ে শঙ্খচক্রের আলপনা। আমার ছত্রধারিণীকে শুধোলেম, “আহা, ঘরখানি কার?” সে বল্লে, দুয়োরাণীর।
তারপরে ঘরে ফিরে এসে সন্ধ্যের সময় বসে আছি, ঘরে প্রদীপ জ্বালিনি, মুখে কথা নেই।
রাজা এসে বললে, “তোমার কি হয়েচে, কি চাই?”
আমি বল্লেম্, “এ ঘরে আমি থাক্ব না।”
রাজা বল্লে, “আমি তোমার কোঠাবাড়ি বানিয়ে দেব গজদন্তের দেওয়াল দিয়ে। শঙ্খের গুঁড়োয় মেঝেটি হবে দুধের ফেনার মতো শাদা, মুক্তোর ঝিনুক দিয়ে তার কিনারে এঁকে দেব পদ্মের মালা।”
আমি বললেম, “আমার বড়ো সাধ গিয়েচে, কুঁড়ে ঘর বানিয়ে থাকি তোমার বাহির বাগানের একটি ধারে।”
রাজা বললে, “আচ্ছা বেশ, তার আর ভাবনা কী?”