পাতা:লেখকের কথা - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

লে খ কে র ক থা

কোথাও নেই যে, “জমিদার নন্দনটি”র মাথায় গ্রামাঞ্চলে শিল্পবিস্তারের কল্পনা গজিয়েছিল অথবা কাজে সে এরকম কোন চেষ্টা করেছিল।

  ভালোভাবে দেখাতে পেরেছি কি পারিনি সে প্রশ্ন আমার বিচার্য নয়। কিন্তু আমার নায়কটির আসল সমস্যা কী-বইটিতে সে বিষয়ে যথেষ্ট বলা হয়েছে। নিজের ‘উচ্চ শিক্ষা' নিয়ে কি করবে, উচ্চশিক্ষার মহান আদর্শের খাতিরে যৌবনের সেরা বছরগুলি সাধনায় খরচ করে দেশবিদেশ থেকে সঞ্চয় করা বিজ্ঞানের জ্ঞান এদেশে কিভাবে কোন কাজে লাগালে কিছু পয়সাও আসবে, তার স্বপ্ন তার সাধনাও সফল হবে—এই নিয়ে আমার নায়কটি ফাঁপরে পড়েছে। শিক্ষাদীক্ষার সার্থক প্রয়োগের সুযোগ সুবিধার অভাবের চাপে একজন উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তির এদেশের বাস্তবতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে খানিকটা নতুনভাবে শিক্ষা প্রচেষ্টায় নামার অর্থ গ্রামাঞ্চলে শিল্প বিস্তারের প্রচেষ্টা হবে কেন? কলকাতা থেকে দূরে নিজের সুবিধাজনক স্থানে রেলস্টেশনের ধারে কারখানা খোলার জন্য কি অচ্যুতবাবু আমার নায়কের কাজের মনগড়া অর্থ করেছেন?

 ‘জমিদার-নন্দন-’এ অচ্যুতবাবুর আপত্তির কারণটা বুঝলাম না। অন্য কোন ধনীর উচ্চ শিক্ষিত নন্দনকে নায়ক করলেও গুণের সার্থক প্রয়োগের সমস্যা থেকে যেত—কেবল কাহিনী, পরিবেশ ও চরিত্র হতো অন্যরকম।

৮০