পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১০১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
খ্রীষ্টধর্ম্মে দীক্ষা।
৭৭

মনে মনে স্থিরসঙ্কল্প করিলেন আর কখনও বাড়ী ফিরিবেন না। এখন তিনি খ্রীষ্টান, গৃহ শূন্য, অর্থ শুন্য, তিনি অর্থ উপার্জ্জন করিয়া যে আত্ম পোষণ করিবেন,—এ ক্ষমতা তাঁহার হয় নাই,—তবুও এক মুহূর্ত্তের জন্যও তাঁহার মন টলিল না,—তিনি ভীত হইলেন না;—মনে মনে প্রতিজ্ঞা করিলেন, যতই কেন কষ্ট হউক না গৃহে কখনও ফিরিব না। তাঁহার খ্রীষ্টান হওয়ার সংবাদ পাইয়া তাঁহার আত্মীয় স্বজন তাঁহার সহিত সকল সম্বন্ধ পরিত্যাগ করিলেন। তাঁহার পিতা গিরিশ বাবু তাঁহাকে ত্যজ্যপুত্র করিলেন ও জীবনে আর তাঁহার মুখ দেখিবেন না শপথ করিলেন। সুরেশ গৃহ-শূন্য, অর্থ-শূন্য, কলিকাতার রাজপথে সহায় হীন ঘুরিয়া বেড়াইতে লাগিলেন।

 আসটন সাহেব এই সময়ে নানা রূপে সুরেশকে সাহায্য করিয়াছিলেন। তিনি লণ্ডন মিশনকলেজে তাঁহাকে বাস করিতে দিয়াছিলেন;—সুরেশের ভোজন ও বাসের জন্য এক পয়সাও লাগিত না। ইচ্ছা করিলে তিনি লেখা পড়া শিখিয়া বিদ্বান্‌ হইয়া অন্যান্য দেশীয় খৃষ্টানদিগের ন্যায় ভবিষ্যতে সুখ স্বচ্ছন্দে জীবনযাত্রা নির্ব্বাহ করিতে পারিতেন; কিন্তু সুরেশের স্বভাব সে রূপ ছিল না। লেখা পড়া করিবার জন্য তাঁহার জন্ম হয় নাই; অথচ তিনি পরের গলগ্রহ হইয়া থাকিবার পাত্রও নহেন;—কাজেই তিনি কোন রূপ একটা চাকরী জোগাড়ের জন্য চারি দিকে নানা স্থানে চেষ্টা পাইতে লাগিলেন। নানা স্থানে চেষ্টা করিয়াও সুরেশ কোন চাকুরী জোগাড় করিতে পারিলেন না; একে তাঁহার বয়স অল্প, তাহার উপর লেখা পড়া কম, তাঁহাকে কে কি কার্য্য দিবে? তিনিই বা কি কার্য্য করিতে পারিবেন?