পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১০২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৮
লেফটেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস।

 গবর্ণমেণ্ট আফিস, সওদাগরি আফিস, রেল আফিস, ডক, জেটি;—যেখানে কোন চাকুরী পাইবার সম্ভাবনা আছে, সুরেশ সেই সেই খানেই গেলেন, কিন্তু কোথাও কিছু হইল না। লোকে তাহার দুঃখে সহানুভুতি না কবিরা বরং তাহাকে বিদ্রুপ করিত। বিশেষত তিনি খ্রীষ্টান হইরাছেন শুনিয়া দেশীয় কেরাণীগণ তাঁহাকে নানা রূপে অপমানিত করিতেন। সুরেশ বাধ্য হইরা এই সকল হাসি বিদ্রুপ সহ কণিতেছিলেন; উপায় নাই। একটা না একটা কোন কিছু না করিলে নয়।

 তাঁহার চাকরীর বয়স নহে, তাহায় পিতা বা আত্মীয় স্বজনের এরূপ অবস্থা নহে যে তাহাকে এই অবস্থায় চাকরীর জন্য লালায়িত হইয়া কলিকাতার রজেপথে ঘুরিয়া বেড়াইতে হয়। উচ্ছৃঙ্খল না হইলে তাহায় পিতা বা খুল্লতাত আহ্লাদের সহিত তাহাকে আদর যত্ন করিতেন, তাহার ও কর্তব্য ছিল এ বয়সে এরূপ করিয়া না বেড়াইয়া লেখা পড়ায় মন দিয়া বিদ্বান হই- বার চেষ্টা করা। তিনি ইচ্ছার সে সমস্ত নষ্ট করিয়া রাজপথে দাড়াইয়াছেন;—ইচ্ছায় বিপদকে ডাকিয়া আনিয়াছেন,— তিনি ক্রোধে গৃহ ত্যাগ করিয়া স্নেহময়ী জননীর হৃদয়ে দারুণ আঘাত দিয়াছেন। পিতৃপুরুষের আদরের সনাতনধর্মকে পরি- ত্যাগ করিয়াছেন;—এ রূপ অবস্থায় তাহার ক্লেশ হইলে সে জন্য তিনি ব্যতীত অন্য কেহ দায়ী নহে।

 যখন নিরাশার মেঘ সুরেশকে আবরিত করিতেছিল, যখন তিনি জীবনে হতাশ হইতেছিলেন, সেই সময়ে তাহার জীবনের সেই ঘোর অমানিশার মধ্যে একটা কালো দেখা দিল। তিনি স্পেন্সেস হোটেলে একটা সামান্য চাকরী পাইলেন। জাহাজের