তিনি অন্ধকারে দুই ব্যক্তিকে অস্পষ্ট দেখিতে পাইলেন, কিন্তু আর সময় নাই। তিনি দেখিলেন যে, ঐ দুই ব্যক্তি তাঁহার দিকে দৌড়িয়া আসিতেছে। তখন তাহার বন্ধুর কথা মনে পড়িল, রেঙ্গুনেয় রাস্তায় যে নানা বিপদ ঘটিকার সম্ভাবনা, তাহ। তিনি এখন বুঝিলেন। আর তাহার জীবনের যে আশা নাই, তাহাও তিনি বুঝিতে পারিলেন। যম যে তাহাকে মৃত্যুর জন্যই রেঙ্গুনে আনিয়াছেন, তাহাও তিনি ভাবিলেন; কিন্তু মরিতে তিনি ভীত নহেন। ভয় কাহাকে বলে তাহা তিনি জানিতেন না। যদি মরিতে হয়, বীরের ন্যায় মরিব, মনে মনে ইহা স্থির করিয়া তিনি সদৃঢ়রূপে রুল ধরলেন।
মগ দুজন তাহার নিকটস্থ হইল। একটা বাঙ্গালী বালককে আক্রমণ করিয়া লুটিয়া লওয়া অতি সহজ কার্য্য ভাবিয়া তাহারা কেবলমাত্র একজন সুরেশকে ধরিতে আসিল। অমনি সুরেশ এমনই বজ্রমুষ্টিতে রুলদ্বারা তাহার মস্তকে প্রহার করিলেন যে সে তৎক্ষণাৎ ঘুরিয়া পড়িল। তখন অপর মগ একটু থমকাইয়া পড়িল, কিন্তু সুরেশ তাহার রুল দ্বারা তাহাকে প্রায় করিবার পূর্বেই সে আসিয়া তাহার উপর আক্রমণ করিল,—হ্যাঁচকা টান মারিয়া তাহার হস্ত হইতে রুল কাড়িয়া লইল। তখন সুরেশ তাহাকে জড়াইয়া ধরিলেন, দুইজনে ঘোর মল্লযুদ্ধ আরম্ভ হইল। উভয়েই সেই অন্ধকারময় রাজপথে পড়িয়া গিয়া উতয়েই উভয়কে পরাজিত করিবার প্রয়াস পাইতে লাগিলেন। কিন্তু সুরেশ দেখিলেন মগ তাহাপেক্ষা বলবান, —আর কিয়ৎক্ষণ মধ্যেই সে তাহা অস্থি চুর্ণ করিয়া দিবে, সে তাঁহাকে জড়াইয়া ধরিয়া সবলে মর্দন করিতে আরম্ভ করিয়াছিল। কিন্তু ভগবান তাঁহার সহায়