পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অগ্নি হইতে স্ত্রীলোক রক্ষা।
৯৩

উদ্ধার করিবার চেষ্টা আর আপনার প্রাণ বলি দেওয়া একই কথা। সেই সহস্র সহস্র লোকের চক্ষের সম্মুখে যুবতীকে অ্রগ্নিতে ঘেরিল, আর রক্ষা পাইবার কোন আশা নাই। দর্শকগণ ভীত ও স্তম্ভিত হইয়া এই ভয়াবহ লোমহর্ষণ ব্যাপার দেখিতে লাগিল, কাহারও মুখ হইতে একটা শব্দও বাহির হইল না।

 এইরূপে এই রমণী চক্ষের উপর অগ্নিতে ভস্মীভূত হইবে, সুরেশের প্রাণে ইহা সহিল না। ইহাকে রক্ষা করিবার জন্য তিনি একবার চেষ্টা করিয়া দেখিতে ইচ্ছুক হইলেন এবং তখনই অমনি চীৎকার করিয়া নিকটস্থ লোকজনকে একখানা মই আনিতে বলিলেন। জনতাস্থ সকলেই রমণীর জন্য বিশেষ ব্যথিত হইয়াছিলেন, তাহাকে রক্ষা, করিবার জন্য যে চেষ্টা হইবে ইহাতে তাহাদের সকলের হৃদয়ই উৎফুল্ল হইল। কয়েকজন ছুটিয়া গিয়া একটা মই আনিল। তখন সুরেশ এক কলসি জল নিজের মাথায় ঢালিয়া চক্ষের নিমিষে মই যাহিয়া অগ্নি পরিবেষ্টিত সেই গবাক্ষের নিকট উঠিলেন। জনতা লোকেরা তাহার অসীম সাহস দেখিয়া স্তম্ভিত হইয়া নীরবে দাড়াইয়া রহিল; স্পন্দিত হৃদয়ে তাঁহার অভূতপূর্ব সাহসিক কার্য্য দেখিতে লাগিল।

 লম্ফ দিয়া সুরেশ অগ্নিময় গৃহে প্রবিষ্ট হইলেন। রমণী তখনও সেইরূপ ভাবে সেই খানে দণ্ডায়মানা, বোধ হয় তাহার সংজ্ঞা নাই, তাহার চারিদিকে মহারোলে অগ্নি জ্বলিতেছে, ধূমে গৃহ পূর্ণ হইয়া গিয়াছে; আর এক মুহুর্ত বিলম্ব করিলে সুরেশ বা রমণী কাহারই প্রাণ রক্ষা হইবার সম্ভাবনা নাই। কিন্তু রমণী নীরব, নিস্তব্ধ, কাষ্ঠ পুত্তলিকার ন্যায় দণ্ডায়মান। তাঁহার