পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১২৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মান্দ্রাজ যাত্রা।
৯৯

দ্রের নিকট হইতে দূরে গমন করিলেন, কিন্তু আবার সেই ভাব মনে আসিল, আবার কে যেন তাঁহাকে সমুদ্রের নিকট আনিল। তিনি প্রাণের সহিত যুদ্ধ করিতেছিলেন। প্রাণের ভিতর কে যেন উহাকে বলিতেছিল, “সুরেশ, মরিও না। তোমার ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল।’'

 এইরূপ নানা চিন্তায় উৎপীড়িত হইয়া সুরেশ ধীরে ধীরে হতাশ পদে সমুদ্র তীরে পদচারণ করিতে ছিলেন। তাঁহার সাহেবী পোষাক পরিধান ছিল, কিন্তু সে পরিচ্ছদের অবস্থা এমনই হইয়াছে যে, তাহা দেখিলেই স্পষ্টই প্রতীয়মান হয় যে তাহার অবস্থা অতি শোচনীয় হইয়াছে। তাহার পাদুকা ছিন্ন, সার্ট ময়লা, কোট ছেঁড়া, পেণ্টুলেনে তালি দেওয়া, তাহার সোলা হ্যাট ধূলায় ধূলায় কৃষ্ণবর্ণ। উহার চেহারা ও বেশ দেখিলে অপরিচিত লোকে যে বিশ্বাস করিয়া তাহাকে কোন কাজ দিবে না তাহাকে বাড়ীতে রাখিবে, এরূপ কোন সম্ভাবনা ছিল না।

 সমুদ্রতীরে সাহেবের ছেলেমেয়েগণ নাচিয়া নাচিয়া খেলিয়া বেড়াহতেছিল —তাহাদের দেখিয়া সুরেশের নাথপুরের কথা মনে পড়িল। কত সুখে বাল্যকালে তিনি নাথপুরে মেলা করিয়া বেড়াইতেন,—আর আজ বিদেশ বিভূমে মাদ্রাজ উপকূলে তাঁহার কি দুর্দশা’ সহসা তাহার জননীর স্নেহমাখা মুখ মনে উদিত হইল। না জানি তাহার এইরূপ নিরুদ্দেশে তিনি কত কষ্টে কাল কাটাইতেছেন। না জানি তিনি কত কাঁদিতেছেন, কত কষ্ট পাইতেছেন!, তিনি দূর মাদ্রাজে অনাহারে মৃত্যুমুখে পতিত; —তিনি তাহা নিতেও পারিলেন না! এই