বার জন্য অনুরোধ করিলেন, বলিলেন যতদিন না কোন চাকুরি হয়, মধ্যে মধ্যে তাহার সহিত দেখা করিলে তিনি তাঁহাকে কিছু কিছু টাকা দিবেন, কিন্তু সুরেশের জননীর সহিত সাক্ষাৎ প্রায়ই ঘটিত না।
এক্ষণে সুরেশের স্বভাবের অনেক পরিবর্তন ঘটিয়াছে। সংসারের বিপদাপদের অপেক্ষা স্বভাবকে নরম করিবার আর উৎকৃষ্টতর যন্ত্র কিছুই নাই। সংসার সমুদ্রের মহাতরঙ্গে পতিত হইয়া সুরেশেরও ঔদ্ধত্য লোপ পাইয়াছিল। তিনি বুঝিয়াছিলেন যে লেখা পড়ার উন্নতি না করিলে সংসারে বড় হইবার কোন আশা নাই। এক্ষণে পড়া শোনা করিবার বা তাহার যথেষ্ট সময় ছিল, কিন্তু পুস্তকে বহুক্ষণ মনোনিবেশ করিয়া থাকা তার পক্ষে অসম্ভব, কিন্তু দেখিয়া শুনিয়া তিনি বুঝিলেন, একটু লেখা পড়ার উন্নতি করা একান্ত আবশ্যক-তাহাই এক্ষণে তিনি সময় পাইলেই কোন না কোন পুস্তক পাঠ করিতেন। তিনি উপন্যাসের বড় প্রিয় ছিলেন না, যে সকল পুস্তকে নূতন নূতন দেশের বর্ণনা আছে, নূতন নূতন শিখিবার বিষয় আছে, তিনি সেই সকল পুস্তকই পাঠ করিতেন।
এইরূপে ক্রমে তাহার লেখা পড়ায় উন্নতি হইতে লাগিল, কিন্তু তাহার জীবনের একমাত্র আশা এখনও দুর হয় নাই, এখনও তিন দিন রাত বিলাত যাইবার উপায় উদ্ভাবন করিয়া থাকেন, মনে মনে এ সম্বন্ধে কত গড়েন ভাঙ্গেন, ইহার জন্য কত লোকের নিকট গমন করেন, কিন্তু কোন স্থানেই কিছু করিতে পারেন না। তিনি তাহা আশা পূর্ণ হইবার কোন সম্ভা-