অতীতের দুর্ভেদ্য তমসাচ্ছাদিত গহ্বরে অনন্তকালের বিরাট জঠর অন্বেষণ করিয়া স্থিরীকৃত হইয়াছে, এক্ষণে পৃথিবীর মানচিত্রে যে স্থান বঙ্গচিত্রে সুশোভিত, এক সময় সেই সুখভূমি, প্রকৃতির বিশাল জলময়ী মূর্ত্তির কুক্ষিগর্ভে ছিল। অনন্ত সাক্ষী হিমালয়ের তটভূমিতে তাহার তরঙ্গাভিঘাত হইত। হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খৃষ্টান প্রভৃতি বিভিন্ন আর্য্য জাতির পূর্ব্বপুরুষেবা তখন মধ্যআসিয়ার বিস্তৃত অধিত্যকায় সুখে পশুচারণ করিত, আর অগ্নি প্রভৃতি বিশ্বশাসিনী বিভিন্ন শক্তিকে সকল বিশ্বাসে উন্মুক্ত প্রাণে উপাসনা করিয়া সঙ্গীততরঙ্গে দিগন্ত প্রতিধ্বনিত করিত। হিমালয়ের অত্যুচ্চ পাষাণ গাত্রে আজিও শঙ্খ ও বিবিধ সামুদ্রজীবের কঙ্কালচিহ্ণ রহিয়াছে। তাহাতে নিঃসংশয়িতরূপে প্রমাণ হয়, এক সময়ে তথায় বঙ্গোপসাগরের তরঙ্গাভিঘাত হইত। এক সময়ে তথায় বজ্রসার কঠোর প্রকৃতির সহিত তরঙ্গ রঙ্গময়ী বিশাল জলময়ী প্রকৃতির নিত্য সংঘর্ষ হইত। ক্রমে বৎসরের পর বৎসর, শতাব্দীর পয় শতাব্দী, যুগেয় পর যুগ চলিয়া গিয়াছে। কালচক্রে নিয়তিয় আবর্ত্তনে বিশাল সাগর গর্ভ হইতে এই রূপরসগন্ধস্পর্শময়ী অগণ্য মানবের আবাসভূমি বঙ্গ গঠিত, সজ্জিত ও শোভিত হইয়াছে। সেই অবিরত সংঘর্ষফলে যা প্রাকৃতিক নিয়মবশে কেমন করিয়া সলিল হইতে প্রদেশ জন্মিল, বিজ্ঞানে সেই জটিল বহস্য—প্রকৃতির লীলা বর্ণিত হইয়াছে। আমরা এস্থলে তাহার উল্লেখ মাত্র করিলাম।
বঙ্গভূমি অগণ্য মানবের বাসস্থান হইয়া অবধি ইহার জল বায়ু আপনার দুর্ব্বলকর প্রভাব প্রকাশ করিতেছে। প্রাচীন আর্য্যগণ যখন তাঁহাদের বিজয়িণী গতিতে উত্তর-ভারত অতিক্রম