পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
স্বদেশকে বিদায়।
১০৭

 সুরেশ কাপ্তেন সাহেবের জাহাজের নাম ও ঠিকানা জানিয়া লইয়াছিলেন; সেইদিন হইতে তিনি প্রত্যহ জাহাজে গিয়া কাপ্তেন সাহেবের সহিত সাক্ষাৎ করিতেন। এইরূপ যাওয়া আশায় উভয়ে বিশেষ সৌহৃদ্য জন্মিল, সাহেব পুত্র নির্বিশেষে সুরেশকে স্নেহ করিতে লাগিলেন। প্রথমে সুরেশ কাপ্তেনসাহেবকে নিজের মনের কথা কিছুই প্রকাশ করেন নাই। পরে এক দিন তিনি নিজের সমস্ত অবস্থা জানাইয়া প্রাণের ইচ্ছা তাহাকে জ্ঞাপন কবিলেন। এত অল্প বয়সে যে তিনি দেশ ত্যাগ করিয়া বিদেশে গমন করেন, এ প্রস্তাবে সাহেব অনুমোদন করিলেন না। পরে সুরেশের অনুনয় বিনয়ে তিনি সুরেশকে লণ্ডনে লইয়া যাইতে সম্মত হইলেন। তিনি সুবেশকে তাহার জাহাজের অ্যাসিষ্টাণ্ট স্টুয়ার্ডের পদে নিযুক্ত করলেন।

 কয়েক দিন পরেই জাহাজ কলিকাতা ছাড়িয়া বঙ্গোপসাগরের দিকে চলিল। বালক সুরেশ;—কারণ তখন তাঁহার বয়স ১৭ বৎসরের উর্দ্ধ নহে——ব্যাকুল নেত্রে জাহাজের ডেকে উপর দাড়াইয়া একবার শেষ কলিকাতা দেখিয়া লইলেন। জাহাজ ছাড়িয়া যাইতেছে দেখিবার অনেক লোক গঙ্গা তীরে দাঁড়াইয়াছে; —কিন্তু তাহাদের মধ্যে সুরেশের আপনায় বলিবার কেহই ছিল না। তিনি যে অন্যের মত দেশ, স্বজন, জনক জননী সকল পরিত্যাগ করিয়া দূর বিদেশে প্রস্থান করিতেছেন, তাহা কেহ জানি না; দেখিল না, কেহ তাঁহার জন্য এক ফোটা চক্ষের জল ফেলিল না!

 সে সময়ে সুরেশের প্রাণের যে কি অবস্থা তার বর্ণনা করা অনাবশ্যক। তিনি কোথা যাইতেছেন, কি করিবেন, তাহার