পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১০
লেফটেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস।

তিনি যেন একাকী, এরূপ অবস্থায় সুরেশ বড়ই কষ্টে দিন কাটাইতে লাগিলেন। তিনি এরূপে দেশ ছাড়িয়া আসিয়া ভাল করেন নাই, মনে মনে ইহা ভাবিয়া সময় সময় অনুতপ্ত হইলেন; কিন্তু তিনি প্রথমে তাহার জীবন যেরূপ দু;খময় ভাবিয়াছিলেন, কয়েক দিন পরে দেখিলেন প্রকৃত পক্ষে তাহা নহে। আরোহীদিগের নিকট তাঁহার চাকুরীর খাতিরে নানা কার্য্যের জন্য যাইতে হইত। আরোহীদিগের পরিচর্যা করাই তাহার চাকুরীর প্রধান কার্য। কাজেই প্রায়ই তাহাকে তাহাদের সহিত কথা বা কহিতে হইত। অনেক আরোহী তাহাকে সর্বোতভাবে চাকরের ন্যায় ব্যবহার করি তেন, প্রায়ই তাঁহার সহিত কথা কহিতেন না; কিন্তু অনেকে তাহার বয়স অল্প, পরিচ্ছদ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, হাবভাব ভদ্রলোকেরা, তাঁহার ইংরাজি কথা ইংরাজের ন্যায় দেখিয়া তাহার সহিত কথা বার্ত্তা কহিতেন; কয়েকজন মেমও তাঁহার সহিত সস্নেহ ব্যবহার করতে লাগিলেন। মেয়েরা তার সহিত কথাবার্ত্তা কহিতে উৎসুক হইতেন; এবং তাহার সহিত কথাবার্তা কহিয়াও বিশেষ আমোদ লাভ করিতেন। সাহেব দিগের মধ্যেও অনেকে তাহাকে দেশীয় বলিয়া ঘৃণা করিতেন না। যদিও তাহারা সুরেশকে সদ্বংশজাত বলিয়া জানিতেন না, তাকে খালাসী খানসামার জাতি মনে করিতেন, তবুও তাকে নিতান্ত চাকরের ব্যবহার করতেন না। সুরেশ প্রথমে জাহাজে কয়দিন যেরূপ মানসিক ক্লেশ বোধ করিয়াছিলেন, পরে পরিবর্তে এর বিশেষ আমোদে ও মুখে কালযাপন করিতে লাগিলেন।