এতদিনে তাঁহার জীবনের আশা মিটিতে চলিল। তিনি যেই লণ্ডনের নিকট হইতেছেন। যে বিলাত দেখিবার এ তিনি কয়বৎসর উন্মাদের ন্যায় কলিকাতার রাজপথে ঘূরিতে ছিলেন, সেই বিলাত আর কয়েকদিনের মধ্যে তিনি দেখিতে পাইবেন! সেই বিলাতের রাজপথে তিনি বেড়াইতে পারিবেন। এ চিন্তায় তাহায় হৃদয় পূর্ণ হইয়া তাহার প্রাণ মন উৎফুল্লিত হইয়া উঠিতেছিল। তিনি ভাবলেন জাহাজস্থ সাহেব মেমগণ যখন তাহাকে এত যত্ন করিলেন, তাঁহারা যখন তাঁহার সহিত এত সদ্ব্যবহার করিলেন, তখন তিনি অনায়াসেই বিলাতে একটা চাকুরী জোগাড় করিতে পারিবেন। হয়ত কোন সদাশয় ইংরাজ তাঁহার ভবিষ্যত উন্নতির পথ উদঘাটিত করিয়া দিবার জন্য তাকে অর্থ সাহায্য করিতে পারেন। এই সফল মুখের চিন্তায় সুরেশ বড়ই সুখে দিন কাটাইতেছিলেন। তাহার সহকর্মচারিগণ এবং নাবিকগণ প্রথমে তাহার সহিত ভাল ব্যবহার না করলেও পরে তাহারা তাহাকে বিশেষ যত্ন করিয়াছিলেন। তাহাকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করিয়া সকলেই তাহাকে আদর যত্ন করিতেন, তাহাকে সন্তুষ্ট করিবার জন্য সকলেই চেষ্টা পাইতেন। ইংরাজ নাবিকগণের ন্যায় মন খোলা লোক সংসারে আর নাই, ইহারা সকলের সঙ্গেই মিশামিশি করি। আমোদ প্রমোদ করিয়া থাকে। সুরেশ ইহাদের সহিত জাহাজে এতই বড় সুখে ছিলেন।
জাহাজে পথে কোন বাধা বিপত্তি ঘটিল না। ক্রমে নিরাপদে জাহাজ লণ্ডনে আসিয়া উপস্থিত হইল। আরোহীগণ দেশে পৌছিয়া কালবিলম্ব না করিয়া সকলে ব্যগ্র হইয়া জাহাজ হইতে