পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১৩৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১৪
লেফটেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস।

মনে পড়িতেছিল; -—আর কি কখন মায়ের সহিত দেখা হইবে, আর কি কখনও দেশে ফিরিতে পারিবেন না!

 সম্মুখে সুরেশ যে দৃশ্য দেখিয়েছিলেন, তেমন তিনি স্বপ্নেও কখনও উপলব্ধি করেন নাই। যে সাহেবদের ভারতবাসী দেবলোকবাসী দেবতা মনে করিয়া থাকে এখানে সেই সাহেব দিগের ছড়াছড়ি। মুটে সাহেব, গাড়োয়ান সাহেব,চাকর নকর সকলই সাহেব,যত দূর দৃষ্টি চলে তত দূর সাদা মুখ কাল লোক একটাও নজরে আইসে না। লণ্ডন সহরই বা কি ভয়ানক ব্যাপার,—বর্ণনা হয় না। হাজার হাজার সাহেব রাজপথে ছুটিতেছেন,—পদ্হালকে লজ্জা দিয়া মেমেরা নানা সাজে যাইতেছেন,—কত গাড়ী, কত ঘোড়া,কত জাহাজ, কত নৌকা; —সুরেশ ভারতের প্রধান সহর কলিকাতাবাসী — কিন্তু লণ্ডন দেখিয়া তাহার কলিকাতাকে নগণ্য সামান্য গ্রাম বলিয়া প্রতীতি জন্মিল।—তিন কোন দিকে কি দেখি কিছুই স্থির করিতে পাবিলেন না, তাঁহার মাথা ঘুরিয়া গেল;— তিনি হতভম্বের ন্যায় এক স্থানে দাঁড়াইয়া এক দিকে চাহিয়া রহিলেন।

 কেহ তাহাকে দেখিতেছিল না,—কেহ তাহার সম্বাদ লই তেছিল না;—আরোহীগণ ব্যগ্রভাবে মালামাল লইয়া আত্মীয় স্বজন বেষ্টিত হইয়া গৃহাভিমুখে চলিয়া যাইতেছিলেন। নাবিক গণ জাহাজকে সুদৃঢ়রূপে নঙ্গরবন্ধ করিবার এই ব্যস্ত ছিল; সুরেশের সম্বাদ লইবার তাহাদের অবসর ছিল না। জাহাজ বন্দরে আসিয়াছে, হিসাবপত্র সই জাহাজ- স্বামীকে দিতে হইবে, সেই সকল কাগজপত্র লইয়া কাপ্তেন সাহেব ব্যস্ত;—