পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
লণ্ডনে।
১১৫

তাঁহারও সুরেশের সম্বাদ লইবার অবসর নাই। এই জনাকীর্ণ জাহাজের উপর সুরেশ মনে করিতেছিলেন, তাহাপেক্ষা একাকী বোধ হয় জগতে আর কেহ নাই; তাহায় বোধ হইল সংসারে তাহাপেক্ষা দুঃখীও বোধ হয় আর কেহ নাই। তাহার অজ্ঞাতসারে তাহার দুই চক্ষু জলে পূর্ণ হইয়া আসিল।

 এই সময়ে কে তাহার পৃষ্ঠে হস্তস্থাপন করিল। তিনি চম কিত হইয়া ফিরিলেন, দেখিলেন আরোহীদিগের মধ্যস্থ একটা মেম। ইনি প্রৌঢ় বয়স্থা;—স্বামী সন্ধানে ভারতে গিয়া ভারতের সহরে সহরে ফিরিয়াও সফল মনোরথ হইতে পারেন নাই, যৌবন প্রায় অতীত, অর্থও তত নাই, এরূপ অবস্থায় স্বামী লাভ বড় সহজ নহে; এক্ষণে তিনি গৃহে ফিরিতেছেন। জাহাজে তিনি আত্মীয় স্বজন বর্জিত, বালক সুরেশকে স্নেহের দৃষ্টিতে দেখিয়াছিলেন, এক্ষণে জাহাজ হইতে যাইবার সময় সুরেশকে দুই একটা মিষ্টকথা না বলিয়া যাইতে পারিলেন না।

 যখন জাহাজ হইতে আরোহীগণ সমস্ত চলিয়া গেলেনগোলমাল কতক দূর হইল—তখন কাপ্তেন সাহেব সুরেশকে ডাকিয়া পাঠাইলেন। সুরেশ নিকটে আসিয়া অভিবাদন করিতে তিনি জিজ্ঞাসা করিলেন, “এখন তুমি কি করিতে চাও? আবার যে চাকুরীতে আসিয়াছ সেই চাকুরীতে জাহাতে যাইতে চাও;— না লণ্ডনে থাকিতে চাও?”

 সুরেশ বলিলেন, আমি এখনও কিছুই স্থির করিতে পারি নাই। কি করিব এখনও ভাবিবার সময় পাই নাই।

 কাপ্তেন। ‘বেশ, ভেবে চিন্তে যা ভাল বিবেচনা কর, ঠিক কর। তবে আমার দ্বারা যেটুকু হয়, আমি সর্বদাই তোমার