করিয়া এই পরম রমণীয় প্রদেশের প্রান্তে পদার্পণ করিলেন, ঐতিহাসিক বলেন, তখন উহা অসংখ্য কৃষ্ণকায় জাতির বাসস্থান ছিল। তাহারা সভ্যতা সম্পর্কমাত্রশূন্য, আকৃতিগত পার্থক্য ব্যতীত শিক্ষা সংস্কারে তাহারা পশু কি মানব, বুঝিবার বিশেষ উপায় ছিল না। জ্ঞানের সহিত অজ্ঞানের, আর্য্যদিগের সহিত এই কৃষ্ণকায় বর্ব্বরদিগের সংঘর্ষে সেই আদিম অধিবাসীবা পরাভূত হইলে উহাদের কতকগুলি সেই নবাগত আর্য্যজাতির বশ্যতা স্বীকার করিল। কিয়দংশ বা আপনাদের বন্যজীবনের মহিমা অক্ষুন্ন রাখিবার জন্য নিকটবর্ত্তী দুর্ভেদ্য দুর্গম পার্ব্বত্য প্রদেশের বনজঙ্গলে আশ্রয় লইল। ইতিহাসে অবগত হওয়া যায়, এই আদিম অধিবাসীর মধ্যে যারা বশ্যতা স্বীকার করিয়াছিল, তাহারা বিজয়ী আর্য্যজাতির দাস ও সেবকরূপে আত্মসমর্পণ করিল। এইরূপে আর্য্যজাতির সহিত তাহাদের দাস্য নিয়ন্ত্রিত হইল। যাহা হউক, এ স্থলে এই সকল প্রাচীন ইতিহাস আলোচনার আমাদের বিশেষ আবশ্যক নাই।
আর্য্যগণ এই প্রদেশে আসিয়া দেখিলেন, ভূমি উর্ব্বরা, জল বায়ু মৃদু ও সরস। ক্রমে স্থানীয় প্রকৃতি এই বীজয়ী আর্য্যবীরদিগের উপর আপনার দুর্জ্জয় প্রভাব বিস্তার করিতে লাগিল। অল্পায়াসে প্রচুর শস্য উৎপাদিত হইতে লাগিল; প্রকৃতির মাধুরীতে অন্তর কোমল ও মৃদু করিয়া তুলিল; তাঁহারা ক্রমশঃ অবিরত কার্য্যোদ্যোগের মহামহিমা অল্পাধিক বিস্মৃত হইতে লাগিলেন। ক্রমে আলস্যের বশীভূত হইলেন। তখন সেই দীর্ঘ নিশ্চিন্ত অবসরে কার্য্যপ্রবণ শান্তিময় জীবনে চিরশান্তির কথা—ধর্ম্মান্দোলনের প্রাদুর্ভাব ঘটিতে লাগিল। সেই ধর্ম্ম-তত্ত্বালোচনায়