পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১৪৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
লণ্ডনে প্রথম রাত্রি।
১২১

 বাড়ীতে অসংখ্য স্ত্রীপুরুষ বাস করে, সকলেই পাপের শেষ স্তরে অবতীর্ণ হইয়াও যেন সন্তুষ্ট নহে। সকল প্রকার উচ্ছৃঙ্খলতা ও পাপকার্য্যেই যেন তাহাদের বিপুল আনন্দ। পুরুষদিগকে দেখিলে ভয় হয়, মারামারি ও দাঙ্গা হাঙ্গামা করা ও সুবিধা পাইলেই মদ খাওয়াই যেন তাহাদের কার্য্য। লাল মুখ মদে মদে যেন আরও লাল হইয়াছে। সকলেরই মুখের কোন না কোন স্থান কাটা, দাঙ্গা হাঙ্গামের চিহ্ন। পুরুষদিগের ন্যায় স্ত্রীলোকগণও ঘোর সুরাশক্ত, মদ পাইলে আর কিছুই চাহে না। একটু মদের জন্য না করিতে পারে এমন কার্য্যই নাই। ইহারা জোঁকের ন্যায় পুরুষদিগকে ধরিয়া আছে। যতক্ষণ যাহার নিকট এক কপর্দ্দকও থাকে, ততক্ষণ ইহারা তাহাকে ছাড়ে না।

 সুরেশ এই সকল নর নারীর মধ্যে আসিয়া কতকটা ভীত হইলেন। ইহাদের স্বভাব, প্রকৃতি, আচার ব্যবহার তাঁহার নিকট অতি বীভৎস ও ভয়াবহ বলিয়া বোধ হইল;—কিন্তু উপায় নাই। ভাল স্থানে বাস করিবার উপযুক্ত অর্থ তাঁহার ছিল না। প্রথম রাত্রিবাসেই সুরেশ বুঝিলেন যে এ স্থানে তাঁহাকে কি রূপ জীবন অতিবাহিত কঝিতে হইবে। তাঁহার তখন বয়স ১৭ বৎসর মাত্র, তিনি বাঙ্গালী;—তিনি যে এই সকল মাতাল জঘন্য প্রকৃতির সাহেব মেমদিগের সহিত বাস করিতে পারিয়াছিলেন ইহাতে তাঁহার সাহসের প্রশংসা না করিয়া থাকা যায় না। তিনি যে একেবারে পুণ্যাত্মা বা সুনীতির আদর্শ ছিলেন এ রূপ নহে;—একটু আধটু কখন কখনও মদ খাইতেন, কিন্তু এই সকল নর নারীর অশ্লীল বচন, বীভৎস কার্য্য, লোমহর্ষণ ব্যবহার দেখিয়া তাঁহার প্রাণ কাঁপিয়া উঠিল;—হৃদয় হৃদয়ে