ফলে একে একে শরীরের বল ও সমর রঙ্গের আনন্দ নৃত্য অন্তর্হিত হইয়া আসিতে লাগিল। এই আলোচনার সঙ্গে সঙ্গে আরও মনে হয়, অনায়াসে বা অল্পায়াসে প্রচুর শস্য সম্পদ লাভই যদি জাতীয় বলবীর্য্য অবসানের প্রধান রা একমাত্র কারণ হয়, তাহা হইলে গ্রীস ও ইটালির নিকট এক কালে প্রায় সমগ্র পৃথিবীবাসী কেন মস্তক অবনত করিয়াছিল। উর্ব্বরতায় গ্রীস ও ইটালি অতুল্য। আজ না জানি কোন দুর্ভেদ্য নিয়তিবশে সেই প্রচণ্ড দুর্জ্জয় জাতির বীরদর্পের অবসান হইয়াছে, কিন্তু শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরিয়া যখন যুনানী ও সোমকগণ জগতীতলে বীরগৌরবে যশঃ সৌরভে পৃথিবী পূর্ণ করিয়াছিল, তখন কি তথাকার ভূমি উর্ব্বরা ছিল না? এখনও স্বাধীনতার লীলাক্ষেত্র বিজ্ঞানের বিহারভূমি ইউনাইটেড ষ্টেটসের স্থানে স্থানে ভূমি যে রূপ উর্ব্বরা অথচ সেই সেই প্রদেশ যে রূপ কর্ম্মপ্রাণ বীরজাতির বাসভূমি, তাহাতে কেমন করিয়া বলি, উব্বরতাই বীরগর্ব্ব অবসানের প্রধান কারণ! অন্নপূর্ণার সন্তান হইলেই কি অসুরনাশিনী শ্যামামূর্ত্তি বিস্মৃত হইতে হইবে।
দ্বিতীয় কথা, বায়ুর আদ্রতা—ভূমি সজলা, সমুদ্রগর্ভ হইতে অনুচ্চ। তাহা হইলে উচ্চ স্থানের অধিবাসীরাই পৃথিবীর প্রধান জাতি হইত। আর ইংলণ্ডেব ন্যায় সজল বায়ুসেবিত দেশবাসি গণের বিশাল সাম্রাজ্যে সূর্য্যদেব অস্তাচলে গমন করেন না, শুনিতে পাইতাম না। নিয়তির দুর্ভেদ্য রহস্য, প্রকৃতির বিচিত্র লীলাপট উত্তোলন করিয়া জাতীয় অধঃপতনের বিশাল মর্ম্মান্তিক ইতিহাস এস্থলে আমাদের আলোচ্য নহে। প্রসঙ্গক্রমে প্রধানতঃ এই মাত্র বলিতেছি—স্থানীয় প্রকৃতিক্রমে অদৃষ্টচক্রে নিয়তিবশে