চতুর্বিংশতি পরিচ্ছেদ।
সুরেশ খবরের কাগজ বিক্রেতা।
কি করিবেন কোথায় যাইবেন সুরেশ কিছুই স্থির করিতে না পারিয়া যেদিকে মন চলিল, সেইদিকেই চলিলেন। অবশেষে ঘুরিতে ঘুরিতে তিনি লণ্ডনের বিখ্যাত উদ্যান হাইড্পার্ক আসিলেন। ক্লান্ত পরিশ্রান্ত হইয়া হতাশ চিত্তে তিনি একটী ঝোপের মধ্যস্থ বেঞ্চিতে বসিয়া পড়িলেন। তৎপরে ভাবিতে ভাবিতে ভাবনার কুল না দেখিয়া বিষণ্নচিত্তে সেই বেঞ্চের উপর শয়ন করিলেন। কখন কিরূপে নিদ্রাদেবী আসিয়া তাঁহার চক্ষে অধিষ্ঠিতা হইলেন তাহা তিনি জানিতে পারেন নাই।
সহসা হাস্যধ্বনিতে সুরেশের নিদ্রাভঙ্গ হইল, তিনি চক্ষু মেলিয়া দেখিলেন একটী ইংরেজ বালক তাঁহার ন্যায় এক কালো মানুষকে এইরূপে শায়িত দেখিয়া আমোদে আটখানা হইয়া হাসিতেছে! সুরেশ প্রথমে উঠিয়া বলিলেন, তৎপরে বালক তাঁহাকে দেখিয়া হাসিতেছে দেখিয়া সুরেশের ক্রোধের উদ্রেক হইল,—বালক বোধ হয় সুরেশের মনের ভাব বুঝিল, বলিল, ‘‘ভায়া, কোন দেশ থেকে এখানে?’’
বালকের বালকসুলভ স্বভাবে সুরেশের ক্রোধ দূর হইল, তিনি বলিলেন, “আমি দূর ভারতবর্ষ হইতে আসিয়াছি।’’