পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১৬৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪০
লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস

বিলাতের সমস্ত গ্রাম দেখা হইল,—সঙ্গে সঙ্গে অনেক লোকের সহিত আলাপ হইত। এইরূপে এই সময়ে তাঁহার সহিত অনেক পল্লিগ্রামবাসী সাহেব মেমের সহিত বন্ধুত্ব হইয়া গিয়াছিল।

 এ দেশের পল্লিগ্রামের ন্যায় ঠিক বিলাতের পল্লিগ্রাম নাই। বিলাতে জঙ্গল একেবারেই নাই, সিংহ ব্যাঘ্র প্রভৃতি কোন হিংস্র জন্তু বিলাতে দেখিতে পাওয়া যায় না। বলিতে গেলে বিলাতে সহরের সংখ্যা অধিক, পল্লিগ্রামের সংখ্যা অল্প। অল্প হইলেও ইংলণ্ডময় নানা সুন্দর সুন্দর ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র গ্রাম অবস্থিত। গ্রামের নিকটেও বিস্তৃত উদ্যানের মধ্যে প্রায়ই একটী না একটী বৃহৎ অট্টালিকা দেখিতে পাওয়া যায়। এই অট্টালিকায় গ্রামের জমিদার বাস করেন। অনেক সময়ে হয়ত তিনি এখানে থাকেন না, হয় লণ্ডনে না হয় অন্যত্র বাস করেন, তাঁহার চাকর বাকরেরা বাড়ীর রক্ষণাবেক্ষণ করিয়া থাকেন। গ্রামের এক প্রান্তে একটী গির্জ্জা আছেই আছে; অনেক গ্রামে গির্জ্জার নিকট বিদ্যালয় গৃহ দেখিতে পাওয়া যায়। গ্রামবাসীগণের অধিকাংশই কৃষক, সকলেই ২।৪টী গরু ও ঘোড়া আছে। এদেশে গরু চাসের জন্য নহে, দুগ্ধের জন্য। এখানে ঘোড়া দ্বারা চাস করান হইয়া থাকে। এতদ্ব্যতীত সব বাড়ীতেই প্রায় দুই দশটা ভেড়া ও শুকর আছে,—এগুলি ভোজনের জন্য। সব বাড়ীর পিছনেই একটী ক্ষুদ্র বাগান আছে, দুই দশটা ফুলের গাছ নাই এমন বাড়ী দেখা যায় না। প্রকৃতপক্ষে বিলাতি কৃষকদিগের বাড়ীগুলি দেখিলে ছবি বলিয়া বোধ হয়, বাড়ীয় ছেলে পিলে গুলিও যেন প্রস্ফূটিত ফুল, সকলেই স্বাস্থ্যের পূর্ণ ছবি।