পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
অবতরণিকা

 আর এক জাতীয় কঅলঙ্ক—অশীতিপর বৃদ্ধ লক্ষণসেনের বিনা যুদ্ধে পলায়ন। সপ্তদশসংখ্যক যবন অশ্বারোহী আসিয়া রাজপুরীতে প্রবেশ করিল আর বঙ্গেশ্বর অদৃষ্টের অবশ্যম্ভাবী পরাজয় স্থিরনিশ্চয় করিয়া অন্তঃপুরের গুপ্তপথ দিয়া পলায়ন করিলেন। শত্রুদিগকে বাধা দিবার কেহ রহিল না, কেহ বাধা দিল না। এইরূপে বঙ্গের স্বর্ণসিংহাসন বিজাতীয় ম্লেচ্ছের করতলগত হইল। বঙ্গ সৌভাগ্যরবি চিরকালের জন্য অস্তমিত হইল। সপ্তদশ মাত্র অশ্বারোহী দ্বারা একটা বিশাল সাম্রাজ্য অধিকৃত হইল, এই অপূর্ব্ব উপন্যাসে কল্পনায় নবীন লীলা থাকিতে পারে, কিন্তু মনস্বী ব্যক্তি তাহা ইতিহাস বলিয়া বিশ্বাস করিবেন না। বিশেষতঃ সেই হিন্দু স্বাধীনতার সময় যবনজাতির প্রতি যেরূপ বিদ্বেষ ও ঘৃণা ছিল, তাহাতে রাজা পলায়ন করলেই রাজ্যবাসী পর্য্যন্ত বাধা মাত্র না দিয়া উর্দ্ধশ্বাসে পলাইবে, ইহা বিশ্বাসের অযোগ্য। হইতে পারে, ভীমার্জ্জুন শ্রীকৃষ্ণের ন্যায় ছদ্মবেশে বা কোন মোহনমন্ত্রবশে জরাসন্ধপুরীপ্রবেশের ন্যায় সেই সপ্তদশ সংখ্যক অশ্বারোহী রাজপুরীতে প্রবেশ করিয়াছিল। হইতে পারে, শ্রীকৃষ্ণেরই ন্যায় কোন পরম যোগী বিশ্বহিতৈষী বৃথা রক্তপাত নিবৃত্তির জন্য পলানের পরামর্শ দিয়াছিলেন। ছলনায় হউক, আর প্রকৃত ভক্তিপাত্র বলিয়া অচল ভক্তিবশেই হউক, রাজা পলায়ন করিলেন। হইতে পারে, সমস্ত বিঘ্ন বাধা অতিক্রম করিয়া যবন যখন পুরী প্রবেশ করিয়াছে, রাজ্যরক্ষা ও আত্মরক্ষার আর উপায় নাই, তখন পলায়ন কি জগতের ইতিহাসে একটী অসাধারণ দুরপনেয় কলঙ্ক কাহিনী! বিশেষতঃ বিশ্বাসঘাতকতার বলে, সপ্তদশজন মাত্র অশ্বারোহী যদি