ছিলেন, ষ্টীভেন্স সাহেব তাহার তুলনায় অত্যল্প কাল মাত্র অবস্থিতি করেন। কর্ণেল শ্লীমান মধ্যভারতে অবস্থানকালে এই বিষয় লিখিয়াছিলেন। বঙ্গবাসী বা মধ্যভারতবাসী সম্বন্ধে তিনি যাহা যাহা লিখিয়াছিলেন, উভয়ই জ্বলন্ত সত্য। সকল দেশের অধিবাসীদিগকেই সহজেই শঠ বা অবিশ্বাসী বলিয়া অভিযোগ আনা যাইতে পারে। বাঙ্গালীর ভীরুতা ও কাপুরুষতায় অপবাদ, আমার বোধ হয়, মেকলের অলীক উপন্যাসের উপষ স্থাপিত। যখন বিভিন্ন সময়ে সঙ্কটময় সকল স্থানেই বঙ্গবাসীর সাহসিকতায় আমাদের অনেকের জীবনরক্ষা হইয়াছে, তখন আর সেই অসত্য অভিযোগ শোভা পায় না।
ডিকেন্স সাহেব বর্ণিত কতিপয় নাগরিক কেরাণী জীবনের ইতিহাস সমগ্র ইংরাজ জাতির মনুষ্যত্বের ইতিহাস বলিলে যে রূপ শুনায় এবং তাহা যেরূপ বিশ্বাসযোগ্য, মেকলে সাহেব বর্ণিত বাঙ্গালী চরিত্রও তদ্রূপ। মেকলে সাহেব তাঁহার লেখার উপকরণ, কতকগুলি কেরাণী ও নিষ্কর্ম্মা বাঙ্গালীর নিকট হইতে সংগ্রহ করিয়াছিলেন। বাঙ্গালীর সামরিক বিভাগে প্রবেশ অনিচ্ছাই বোধ হয়, তাঁহার এই ধারণার মূল। বাঙ্গালীর শীর্ণ অবয়ব যে, তাহার সাহসের অন্তরায়, তাহায় কোন আভাস আমাদের ক্ষুদ্র বুদ্ধিতে আনিতে পারি না। বাঙ্গালীর শীর্ণকায় বরং ম্যালেরিয়ার দুর্দ্ধর্ষ প্রকোপেরই পরিচায়ক—সাহস অভাবের কারণ নহে। বাঙ্গালীর ইউনিফরম পরিবার ও সামরিক শৃঙ্খলার ভিতর বাঁধা থাকিবার অনিচ্ছাই মেকলের মতের মূল। সর্ব্ব বিষয়ে প্রবণতা ও সম্পূর্ণ স্বাতন্ত্র, বাঙ্গালী জীবনের বিশেষত্ব। যদি সামরিক বিভাগে বাঙ্গালীকে কোন স্বাধীন কার্য্যের সম্পূর্ণ