এরূপ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হইয়া তাঁহার অনুসরণ করিল যে, বিদ্রোহি গণ সেই আক্রমণবেগ সহ্য করিতে পারিল না। এই দুর্ব্বার আক্রমণে সেই চিরস্মরণীয় ব্যালাক্লাভার ন্যায় ভীষণ ও ঘোরতর ব্যাপার হইয়াছিল। শত্রুগণ তখন রণে ভঙ্গ দিল, কিন্তু সুরেশ ও তাঁহার অনুচর সৈন্যদল অমিততেজে বীর বিক্রমে যুদ্ধ করিতে লাগিলেন। তাঁহারা যে কেবল শত্রুদিগকে ধৃত করিয়া ক্ষান্ত হইয়াছিলেন তাহা নহে; গোলন্দাজদিগকে স্ব স্ব স্থানেতেই বর্ষা ও ছোয়ার আঘাতে বিনাশ করিলেন। হত্যাকাণ্ডও অতি ভীষণ হইয়াছিল সন্দেহ নাই, কিন্তু সেই যুদ্ধকাণ্ডেই সাধারণতন্ত্রীয় সেনাদল জয়লাভ করিল। স্বদেশ হইতে সহস্র সহস্র যোজন দূরে থাকিয়া বিজাতীয়ের মধ্যে অবস্থান করিয়া, বিদেশীয় রাজ্যের সেনানায়ক হইয়া সুরেশচন্দ্র যে ভীষণ যুদ্ধে জয়লাভ করিয়াছিলেন, এমন ভারতবাসী কে আছে যে, তাহাতে আনন্দিত না হইবে এবং গৌরবান্বিত হইয়া পরমেশ্বরকে ধন্যবাদ প্রদান না করিবে? সুরেশ যে গৌরবে গৌরবান্বিত হইয়াছেন, তাহাতে যে সমগ্র বাঙ্গালী জাতির গৌরব বর্দ্ধিত হইয়াছে, আহাতে সন্দেহ কি?
লেফটেন্যাণ্ট বিশ্বাসের সেই অদ্ভুত আক্রমণেই যে জয়লাভ হয়, তাহা পূর্বেই বলিয়াছি; কিন্তু সমস্ত দিন খণ্ডযুদ্ধ ও মারামারি কাটাকাটি চলিয়াছিল এবং তাহাতেও অনেক বিদ্রোহী বন্দী হইয়াছিল।
সমস্ত দিনের সেই ঘোরতর ক্লেশ ও পরিশ্রমের পর স্বায়ংকালে সুরেশ দশজন বন্দীর সহিত শিবরে প্রত্যাগত হইয়া ক্ষণকাল বায়ুসেবনে স্নিগ্ধ হইবার জন্য নিষ্ক্রান্ত হইলেন। এইরূপে