তবে কি মানসিক গুণে অথবা উভয়ের সমবায়ে? যদি মানসিক গুণকেই সভ্যতা বলে, তবে সে গুলি কি এবং কি রূপেই বা তাহার প্রকাশ? উত্তরে বলা যাইতে পারে, মানবের মানসিক গুণ অসংখ্য;—শিল্পবিজ্ঞানে, কৃষিবাণিজ্যে, সাহিত্যদর্শনে এবং সর্ব্বোপরি সাংসারিক ও ধর্ম্মজীবনে তাহার বিকাশ। কোন জাতি সভ্যতা সোপানে কতদূর অগ্রসর বুঝিতে হইলে, তাহাদের শিল্প-বিজ্ঞানদিই আলোচ্য হইয়া থাকে। এক্ষণে আর একটি জিজ্ঞাস্য, শারীরিক বল এই সভ্যতাবৃদ্ধি বা সভ্যতা লাভের কত দূর উপযোগী, কেনই বা আবশ্যক?
প্রত্যেক কার্য্যই শক্তিসাধ্য। বিদ্যানুশীলন করিতে হইবে, তাহাতেও শক্তির প্রয়োজন। বিপদ্পাত হইতে আত্মরক্ষা করিতে হইবে, তাহাতেও শক্তির প্রয়োজন, অপরকে রক্ষা বা সংহার করিতে হইবে, তাহাতেও শক্তির প্রয়োজন। কিন্তু শারীরিক বলের সহিত মানসিক বলের কতটা সম্পর্ক? মহাবল হইলেই মনস্বী হইতে হইবে অথবা শরীর বলে শ্রেষ্ঠ না হইলে যে, মনস্বী হইতে পারে না, তাহা ত বোধ হয় না। ইংরাজ জাতি আজি নবীন সভ্যতার অগ্রণী। বীরবর নেলশন সেই বীরজাতির ক্ষণজন্মা বীরপুরুষ। বাল্যে ও কৈশোরে তিনি দুর্ব্বল ছিলেন; বীরবিক্রমে যখন তিনি শীর্ষস্থানীয়, তখনও শারীরবলে বলীয়ান নহেন। যে ক্লাইব ভারতে ব্রিটিশ রাজ্যের ভিত্তি সংস্থাপিত করেন, বিখ্যাত ঐতিহাসিক ম্যালিসন যাঁহাকে নেপোলিয়নের সহিত তুলনা করিয়াছেন, শারীরবলে তিনিও অসাধারণ ছিলেন না। যে বিখ্যাত ভ্রমণকারী আফ্রিকার নিবিড় অরণ্যানী ও মরুপ্রান্ত এবং আমেরিকার বিশাল তুষারময় ক্ষেত্র ভেদ