পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/২৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
8
লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস।

বীরত্বও সভ্যতার অঙ্গ। সুতরাং বলা যাইতে পারে, শরীর বল যে স্থলে মানসিক গুণের সহকারী নহে—তথায় উহা সভ্যতার অঙ্গ বা অবলম্বন বলিয়া গণ্য হইতে পায়ে না। মানস বিকাশেই সভ্যতা-বিকাশ;—শারীর বল উহায় পরে ততক্ষণই প্রয়োজন, কার্য্যানুষ্ঠানের জন্য যতক্ষণ তাহা সহকার থাকে। রক্তধারায় পৃথিবী ভাসাইলে সভ্যতার যে অধিক অঙ্কুরোদগম হয়, সে বিশ্বাস আমাদের নাই।

 মানস গুণই যখন সভ্যতা, তখন দেখা যাউক, সভ্যতালোকিত জগতের ইতিহাসে বঙ্গের স্থান কোথায়? বঙ্গবাসীর এমন কি মানবিক গুণ আছে, যাহাতে তাহারা জগতের কোন শীর্ষস্থান অধিকার করিতে পারে?

 আমরা পূর্ব্বেই বলিয়াছি, কোন জাতির সভ্যতার পরিমাণ করিতে হইলে সাধারণতঃ সেই দেশের কৃষি, বাণিজ্য, শিল্পবিজ্ঞান, এবং সর্ব্বোপরি সাংসারিক ও ধর্ম্ম জীবন আলোচ্য হইয়া পড়ে। কৃষিকার্য্যে বঙ্গের প্রকৃতি এমনই অনুকুল যে, অল্পায়াসেই প্রচুর শস্য জন্মে, এবং কিরূপ প্রণালীতে তাহা উৎপাদিত হইতে পারে, বঙ্গের কৃষক সম্প্রদায় নিরক্ষর হইলেও কার্য্যক্ষেত্রে তাহাদের বিলক্ষণ অভিজ্ঞতা আছে।

 শিল্প বা বাণিজ্য আদর্শ সভ্যতা যা মানবজনোচিত উচ্চ গুণাবলীর মধ্যে গণনীয় নহে। তবে শিল্প সম্বন্ধে এইমাত্র বলা যাইতে পারে, ঢাকার মসলিন, কৃষ্ণনগরের মৃত্তিকা নির্ম্মিত প্রকৃতির অনুকৃতি, মেদিনীপুর অঞ্চলের তসর ও গরদ, বীরভূম অঞ্চলের লৌহের গঠন, দিনাজপুর অঞ্চলের প্রাচীন গৃহাদির ভগ্নাবশেষ উচ্চ শিল্পের পরিচায়ক। তবে শিল্প ও বাণিজ্য পৱম্পর এক সূত্রে