বিচিত্র ঘটনা না হইলেও সুরেশচন্দ্রের তাহাতে একটু অসাধারণত্ব ছিল। এবং বালক সাধারণের লোহিতোজ্জ্বল অগ্নি বা দীপশিখা দর্শনে যে আনন্দ তাহা বালসুলভ হইলেও সম্ভবতঃ উহার একটা বিশেষ কারণ আছে। অনেকে অনুমান করেন, এই আনন্দের মূলে সৌন্দর্য্য-প্রিয়তা বর্ত্তমান। হিতাহিত জ্ঞান শূন্য বালক সেই আকর্ষণে মোহিত বা বিদগ্ধ হইতে পশ্চাৎপদ নহে; কিন্তু জ্ঞানবৃদ্ধগণও কি সৌন্দর্য্যেয় প্রদীপ্ত শিখায় বহ্নিমুখে পতঙ্গ পতনের ন্যায় স্বেচ্ছায় দগ্ধাবশেষ না হইয়া বিরত হইতে পারেন?
যাহা হউক, সুরেশচন্দ্র ও অগ্নির সহিত ক্রীড়ায় একান্ত আগ্রহ পরিত্যাগ করিতে পারিতেন না। স্নেহময়ী জননী সদাই শঙ্কিতা, অবাধ্য অবোধ সন্তান আগুন লইয়া কখন কি করিয়া বসে! কিরূপে অগ্নি বা দীপশিখার উপর সন্তানের ভয় জন্মাইয়া দিতে পারেন, তাহার উপায় চিন্তা করিতে লাগিলেন, অবশেষে স্থির করিলেন, আগুনের তাপ লাগিলে বালক হয়ত আর আগুনের নিকট যাইবে না; এইরূপে তিনি আগুনের উপর সন্তানের ভয় জন্মাইয়া দিবার সঙ্কল্প করিলেন। একদিন সন্ধ্যাকালে তাঁহাকে অত্যাবশ্যক গৃহকর্ম্ম করিতে হইবে, সুশীল সুরেশ সঙ্গে থাকিলে তাহা কোনমতেই হইবার নহে, অথচ গৃহে এমন কেহ নাই, যাহার নিকট রাখিয়া মার প্রাণ স্থির থাকতে পারে। অন্ধকার গৃহে বালককে একাকীই বা কিরূপে রাখা যায়; আবার প্রজ্জলিত দীপালোকেই বা কোন প্রাণে রাখিয়া যাইতে পারেন। তখন কেরোসিন ল্যাম্পের এত প্রাদুর্ভাব হয় নাই এবং এরূপ সম্পত্তিশালীর গৃহও