একবার নিম্নে যেন নিক্ষেপ করে, আর অতুল আনন্দে সেই কচি কচি হাত দুখানি নাচাইয়া অপূর্ব্ব ভঙ্গিতে করতালি দিতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে অর্থহীন আনন্দ সঙ্গীত। বালকের চীৎকারে সুরেশচন্দ্রের মাতা ও আত্মীয় স্বজন সেইস্থানে আসিয়া পড়িল। বালকের কাণ্ড দেখিয়া সকলেই আতঙ্কে শিহরিয়া উঠিল। একটু অসাবধান, ভারবৈষম্য বা দুর্ম্মতি ঘটিলেই ভগবান যে কি দুর্ঘটনাই ঘটাইবেন, সকলে সেই আশা করিতেছেন। ২০ ফুট উচ্চ হইতে সেই দুই বৎসরের শিশু ভূমিতলে পড়িলে আর কি তাহাকে পাওয়া যাইবে! এদিকে আত্মীয় স্বজনকে দেখিয়া বালকের আনন্দ বাড়িয়া উঠিল; হর্ষোৎফুল্ল বালক সুকুমার গ্রীবা বাঁকাইয়া অপূর্ব্ব ভঙ্গীতে করতালি দিতে লাগিল। সকলেই ভীত—বিপদের আর বিলম্ব নাই। এইবার হয়ত পড়িল কেহ যে সেই “মৈ’’এ উঠিয়া বালককে নামাইয়া আনিবে, তাহাও একরূপ অসম্ভব। কেন না হয়ত উঠিতে গেলেই সিড়ি সামান্য নড়িবে। সেই সামান্য কম্পনে সুরেশের পদস্খলন হইতে পারে; অথবা কাহাকেও উঠিতে দেখিলে উন্মত্ত সুরেশ তাহাকে দেখিয়া লাফাইয়া ঝাঁপাইয়া পড়িবে কি না, কে বলিতে পারে! সুরেশচন্দ্রের জননী সন্তানকে যতই স্থির হইয়া বসিতে বলিতেছেন সুবোধ শিশুর সঙ্গীতভঙ্গী ও চীৎকার ততই বাড়িতেছে। ভয় দেখাইয়া বা ভর্ৎসনা করিয়া সুরেশকে কোনরূপ প্রতিনিবৃত্ত করিবার চেষ্টা বৃথা বুঝিয়া তখন তিনি স্নেহকাতরবাক্যে সুরেশকে ক্ষণেকের জন্য শান্ত হইতে অনুনয় করিলেন। ক্লান্তিবশেই হউক, অথবা মাতার কাতরতাতেই হউক, সুরেশচন্দ্র স্থির হইয়া বসিল। তখন কয়েক ব্যক্তি সেই “মৈ’’খানি দৃঢ়রূপে ধরিয়া রহিল, যেন
পাতা:লেফ্টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/৫১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বাল্য ঘটনা।
২৭