আপনার মধ্যাহ্ন-আহার সংগ্রহ করিয়া ক্ষীণপ্রাণ দুর্ব্বল কাঠবিড়ালের উপর বসিয়া আপনার দারুণ হিংস্র ও বন্য প্রকৃতির পূর্ণ পরিচয় দিতেছিল, দুই বৎসরের অবোধ শিশু সুরেশচন্দ্রের তখন ঘটনাক্রমে সেই দিকে দৃষ্টি পড়িল। অশান্ত বালক কাঠবিড়ালী লইবার জন্য অগ্রসর হইল। বালক জানে না, বিজয়ী বীর আপনার বিজয়াধিকার বিনা বাধায় পরিত্যাগ করিবে না। বালক যেমন সেই রক্তাক্ত কলেবর কাঠবিড়াল লইতে হস্ত প্রসারণ করিল, বিড়ালটী অমনই তাহাকেই আক্রমণ করিল। এই বিড়ালটীর সহিত সুরেশের বিলক্ষণ সদ্ভাব ছিল। সুরেশচন্দ্র আপনার আহারের কিয়দংশ প্রত্যহই বিড়ালটীকে উপহার দিত।
কিন্তু বিড়ালের আবার কৃতজ্ঞতা। সে তর্জ্জন গর্জ্জন করিয়া সুরেশকে আক্রমণ করিল। সুকুমার শিশু, দুঃ—দুঃ বলিয়া বিড়ালটাকে তাড়াইতে চেষ্টা করিল, কিন্তু বালকের কথার বিড়াল কর্ণপাত করিল না। বালকের চিরাভ্যস্ত দুঃ—দুঃ উপেক্ষা করিয়া সেই কোমল করপল্লব দুইখানি ক্ষত বিক্ষত করিল, বালকও সেই রক্তাক্ত হস্তেই সাধ্যমত বাধা দিতে ছিল। কিন্তু সাধারণ বালকের ন্যায় চীৎকার বা ক্রন্দন না করিয়া সুরেশচন্দ্র আপনার সঙ্কল্প ও কর্ত্তব্য সাধনে বিরত হয় নাই। সেই দারুণ নখর প্রহার অন্য বালকে সহ্য করিতে পারিত না। সুরেশচন্দ্রের জীবন যেরূপ সঙ্কটাপন্ন হইয়াছিল, তাহাতে আরও কিয়ৎক্ষণ সেইরূপ আঘাত প্রতিঘাত চলিলে যে কি ঘটিত, স্মরণ করিলেও আমাদের শরীর শিহরিয়া উঠে। যাহা হউক, সৌভাগ্যক্রমে একজন সেই সময়ে ঘটনাস্থলে