ভীত রা কাতর নহেন। বিশেষ সৌভাগ্যক্রমে সঙ্গে একখানি তীক্ষ্ণধার চুরি ছিল। নিমেষ মধ্যে দক্ষিণ হতে ছুরিকা ধরিয়া দন্ত দ্বারা উহা খুলিয়া ফেলিলেন। নিমেষ মধ্যে সেই ছুরিকা আপনার দৃঢ়বদ্ধ মুষ্টি নিয়ে সর্পের গ্রীবাদেশে বসাইয়া দিলেন। নিমেষ মধ্যে উহা দ্বিখণ্ডিত করিয়া ভূমিতে নিক্ষেপ করিলেন। এইরূপে অসীম সাহসে তুল্য কার্যতৎপরতায় একাদশ বৎসরের বালক আসন্ন মৃত্যুমুখ হইতে অব্যাহতি লাভ করিল।
শত্রু নিপাত হইল। সুরেশচন্দ্র এইবার আপনার অতীত সাধনে অগ্রসর। এইরূপে আত্মরক্ষা করা হয়ে অসাধ্য এবং এ কেহ হইলে আর কালবিলম্ব না করিয়া গৃহাভিমূখে ফিরিত, কিন্তু সুরেশচন্দ্রের তখন ভয়ের কারণ গিয়াছে, সুতরাং সঙ্কল্প সাধন কেনই বা অবশিষ্ট থাকে; তখন তিনি পক্ষীশারয়িতে প্রবৃত্ত হইলেন। দুইটা সুন্দর পক্ষীশাবক সংগ্রহ করিয়া বৃক্ষ হইতে অবতরণ করলেন এবং সেই আপনার অপূর্ব বিজয় নিশান, মনে কর্তিত মুখ সেই সর্পটীকেও সঙ্গে লইয়া গৃহে প্রত্যাবৃত্ত হইলেন। সুরেশচন্দ্রের পিতা মাতা ও আত্মীয় মণ্ডলী সেই বিজয় অপূর্ব ধন সম্পত্তি দেখিয়া এনে শিহরিয়া উঠিলেন, গয়ে আদ্যোপান্ত সমূহ অনিয়া বিস্মিত ও স্তম্ভিত হইলেন। পিতা মাতার প্রানে তখন যেরূপ হর্ষ বিষাদ ও বিস্ময়ের ভর উঠিয়াছিল, তাহার বর্ণনা নির্জীব লেখনী মুখের সাধ্যাতীত।