আর এক মুহুর্ত্ত। সেই এক মূহুর্ত্তে কেবল একজনের নহে, শত সহস্র লোকের অদৃষ্ট-লিখনি স্থির হইয়া গেল। এই বালকের মৃত্যু বা জীবনের সহিত সহস্র লোকের জীবন সংমিশ্রিত ছিল। সুরেশও সেই সময়ে বুঝিলেন যে আর এক মূহুর্ত্তের মধ্যে তাঁহার জীবন নাট্টের শেষ মীমাংসা হইয়া যাইবে, কিন্তু তাহাতে তাঁহার প্রাণ টলিল না, তিনি ভীত হইলেন না, বরং হৃদয়ে একরূপ অনির্ব্বচনীয় আনন্দ উপলব্ধি করিতে লাগিলেন।
পর মুহুর্ত্তে সুরেশ হস্তস্থ বংশ নির্ম্মিত ছিপ দ্বারা বরাহের মস্তকে সবলে আঘাত করিলেন, বরাহ সেই গুরুতর আঘাতে স্তম্ভিত হইয়া উল্টাইয়া পড়িল। সে পুনরায় উঠিবায় পূর্ব্বেই কুকুরগণ আসিয়া তাহাকে চারিদিক হইতে বেষ্টন করিয়া দংশনে দংশনে ব্যতিব্যস্ত করিয়া তুলিল। একদিকে কুকুরকে আক্রমণ করিতে গেলে, আর তিনদিক হইতে কুকুরগণ তাহাকে দংশন করিতে থাকে। এদিকে সুরেশও ছিপদ্বারা বৃষ্টিধারার ন্যায় ক্রমাগত বরাহকে প্রহার করিতেছেন,—বরাহ প্রকৃতই নিতান্ত বিপন্ন হইয়া পড়িয়াছে। পলাইতে প্রাণপণে চেষ্টা করিয়াও সে কোনমতে পলাইতে পারিতেছে না। এদিকে সাহেবেরাও আসিয়া উপস্থিত হইলেন। এক্ষণে গুলি চালাইবার আর উপায় নাই,—বন্দুক ছুড়িলে কুকুরের গায় লাগে। বরাহের অঙ্গের এমন স্থান নাই যেখানে একটা না একটা কুকুর কামড়াইয়া আছে, কাজেই সাহেবগণ বন্দুকের অপর পৃষ্ঠ দিয়া বরাহকে ক্রমাগত প্রহার করিতে লাগিলেন; এইরূপ প্রহারে অনতিবিলম্বে বরাহ পঞ্চত্ব লাভ করিল।
বরাহ বধ হইলে সাহেবেরা এই বীর বালকের প্রতি দৃষ্টি-