পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/৭২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৮
লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস।

পাত করিলেন। তাঁহারা বাঙ্গালীর মধ্যে এরূপ বালক এপর্য্যন্ত দেখেন নাই;—তাঁহারা বালকের সাহসে ও প্রত্যুৎপন্নমতিতে বিশেষ প্রীত হইয়াছিলেন,—তাঁহারা সুরেশকে বেষ্টন করিয়া দাঁড়াইলেন এবং ভাঙ্গা ভাঙ্গা বাঙ্গালায় তাঁহার নাম ধাম জিজ্ঞাসা করিলেন। রাত্রি হইয়া গিয়াছে, সুরেশের সঙ্গীগণ পলাইয়াছে, তাহাদের সঙ্গীর কি হইল তাহা তাহারা দেখে নাই,—সুরেশ যেমন তাহাদিগকে পলাইতে বলিয়াছিলেন, তাহারা তেমনই পলাইয়াছিল, এক মুহুর্ত্তও অপেক্ষা করে নাই। রাত্রি হইয়াছে, চারিদিক অন্ধকারে ঘেরিয়াছে, পাড়াগাঁয়ের মাঠ,—রাস্তা নাই,—এরূপ অবস্থায় গ্রাম পর্য্যন্ত পৌঁছান সহজ নহে। সাহেবেরা সুরেশকে তাঁহাদের সঙ্গে কুঠিতে যাইতে অনুরোধ করিতে লাগিলেন।

 সুরেশ নাম ধাম বলিলে, একজন সাহেব তাহা নিজ নোটবুকে লিখিয়া লইলেন। নিজেরা সাহসী,—ইংরাজজাতির ন্যায় সাহসের আদর করিতে আর কেহ পারে না। যাহাতে বীরত্ব, যাহাতে তেজ, যাহাতে সৎসাহস,—ইংরাজগণ তাহাকেই প্রাণের সহিত ভালবাসেন, মান্যভক্তি করেন,—স্বভাবতই তাঁহাদের প্রাণ তাহার প্রতি আকৃষ্ট হয়। তাঁহারা নীচতা, হীনতা, দুর্ব্বলতা, তোষামোদকারিতা প্রভৃতিকে হৃদয়ের সহিত ঘৃণা করেন; ভারতবাসীকে যে তাঁহারা ঘৃণা করেন, তাহার কারণ ভারতবাসী হীন, নীচ, দুর্ব্বল তোষামোদকারী।

 যেখানে এই ব্যাপার ঘটিয়াছিল, সেখান হইতে নাথপুর প্রায় একক্রোশ। অন্ধকার হইয়াছে, সুরেশ শিকারীগণকে পরিত্যাগ করিয়া যতশীঘ্র হয় গ্রামাভিমুখে গমনের চেষ্টা করি-