পূর্ণ। বোধ হয় এমন মনমুগ্ধকর পদ্ম আর কোন পুষ্করিণীতে কখনও ফুটিত না।
প্রায় সন্ধ্যা হয়। অস্তমিত সূর্য্যের সুবর্ণ কিরণ মেমসাহেবের বদনে পতিত হইয়া এক অপরূপ সৌন্দর্য্যের আবির্ভাব করিয়াছে। সেই সূর্যের কিরণ বৃক্ষপত্রে পতিত হইয়া চারিদিক সুবর্ণে রঞ্জিত করিয়াছে। পাখীগুলি ডালে ডালে বসিয়া সন্ধ্যা সমাগমে প্রাণমন খুলিয়া গান ধরিয়াছে, দূরে কৃষকগণ স্ব স্ব গোপাল লইয়া গাইতে গাইতে গৃহাভিমুখে ফিরিতেছে। সন্ধ্যায় প্রকৃতির সৌন্দর্য্যে মেম সাহেব বিমুগ্ধ ও উৎফুল্লিত হইয়া গাড়ী হইতে সেই পুষ্করিণীর তীরে নীল নবদুর্ব্বাদল উপরে ধীরে ধীরে পদচারণ করিতে লাগিলেন, —সুরেশ ও তাঁহার পাশে পাশে চলিলেন। সুন্দর অপূর্ব্ব স্থান,—পুষ্করিণীর চারি পার্শ্বে রসাল অমৃত বৃক্ষ সকল সারি সারি দাঁড়াইয়া আছে, সেই সকল আম্র বৃক্ষের ঘন পাতায় অস্তমিত সূর্য্যের কিরণ পতিত হইয়া বৃক্ষগুলিকে এক অপূর্ব্ব সৌন্দর্য্যে ভুষিত করিয়াছে। সম্মুখে বিস্তৃত সরোবর পদ্মে পরিপূর্ণ, ছোট বড় নানা রঙ্গের নানা পদ্ম সমস্ত পুষ্করিণীটীর হৃদয় পূর্ণ করিয়া ফুটিয়া আছে। চিরকালই ইংরাজ মহিলা ফুলের বড়ই প্রয়াশিনী, ফুল দেখিলে, ফুল পাইলে মেমগণ হৃদয়ে যত অনন্দ উপলব্ধি করেন, হীরা মুক্তা জহরত পাইলে তত হন না। মেমসাহেব কতকগুলি পদ্ম সংগ্রহ করিবার জন্য মনে মনে বড়ই ব্যগ্র হইলেন, কিন্তু কে এ সময়ে পুষ্করিণীতে নামিয়া পদ্ম আনিবে? সঙ্গে সহিশ পর্যন্ত নাই, নিকটে কোন লোককেই দেখিতে পাওয়া যায় না। তিনি পদ্মলাভে হতাশ হইলেন, মনে মনে মনের বাসনা সমীত করিলেন, সুরেশেকে