পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/৮০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৫৬
লেফ‍্টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস।

ক্রমে ডুবিবার উপক্রম করিতেছেন, কি যেন তাঁহার পা জড়াইয়া ধরিতেছে। মেমসাহেব ভীত হইয়া তাঁহাকে ফিরিয়া আসিবার জন্য পুনঃ পুনঃ অনুরোধ, অনুনয়, অবশেষে আজ্ঞা করিতে লাগিলেন, কিন্তু সুরেশ ফিরিলেন না,—কষ্টে—বহু কষ্টে,তিনি পদ্মের নিকট পৌঁছিলেন ও কতকগুলি পদ্ম সংগ্রহ করিলেন, কিন্তু তৎপরেই তিনি ফিরিবার জন্য বিষম চেষ্টা করিয়াও ফিরিতে পারিলেন না, ক্রমে ডুবিয়া যাইবার উপক্রম হইল। তখন মেমসাহেব ভীত হইযা চীৎকার করিয়া উঠিলেন। তাঁহার চীৎকারে একজন কৃষক ছুটিয়া আসিল, সে আসিয়াই সুরেশের বিপদ বুঝিল। সে তৎক্ষণাৎ চীৎকার করিয়া আরও জনাকয়েককে ডাকিল। তখন তাহারা অনতিবিলম্বে একটা দড়ি সংগ্রহ কবিয়া সুরেশের দিকে ফেলিয়া দিল; সুরেশও তৎক্ষাৎ সেই দড়ি ধরিলেন ও কোমরে বাঁধিয়া দিলেন। তখন কৃষকগণ সকলে তাঁহাকে টানিয়া তীরে উঠাইল। দেখা গেল সুরেশের সর্ব্বঙ্গ কর্দ্দম আবরিত হইয়া গিয়াছে। বহুবৎসর ধরিয়া এই পুষ্করিণীতে কর্দ্দম জমিতে ছিল। এত জমিয়াছিল যে কেহ আর সাহস করিয়া ইহাতে নমিত না। নমিলে দেখিতে দেখিতে সে কর্দ্দমে বসিয়া যাইত, আর উঠিবার তাহার সাধ্য থাকিত না। কৃষকগণ না আসিলে সুরেশেরও আজ ঠিক এই অবস্থা হইত। তাঁহার প্রাণরক্ষার কোন রূপ সম্ভাবনা ছিল না। কিন্তু মৃত্যুমুখে পড়িয়াও সুরেশ পদ্ম ছাড়েন নাই, তিনি যখন পদ্ম সহ তীরে উঠিলেন তখন তাঁহার কথা কহিবার ক্ষমতা ছিল না।

 মেম সাহেব অনতিবিলম্বে সুরেশকে গাড়িতে তুলিয়া