পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
সুরেশের উচ্ছৃঙ্খলতা
৬৭

বেদনা পাইতেন, তাহা বলা বাহুল্য। মায়ের নিকট তিনি বড়ই আদরের ছেলে ছিলেন, পারতপক্ষে তাহার মেহময়ী জননী তাঁহাকে কিছু বলিতেন না, কিন্তু পিতা গিরিশচন্দ্র বিশ্বাস কিরূপে চক্ষের উপর পুত্রকে অধঃপাতে বইতে দিবেন, তিনি বুঝাইয়া, ধমকাইয়া, মারিয়াও পুত্রকে পড়া শোনায় মন দেওয়াইতে পারিলেন না। ইহাতে তাহার পিতায় হৃদয়ে যে নিতান্তই কষ্ট হইবে, ইহা আর অধিক কথা কি?

 সুরেশ গাধা ছেলে ছিলেন না। তিনি যে খুব বুদ্ধিমান তাহা তাঁহার শিক্ষকগণ বলিতেন; একটু যত্ন করিয়া লেখা পড়া করিলে তিনি যে পণ্ডিত হইতে পারেন, তাহা তাঁহার পিতা, আত্মীয় স্বজন, শিক্ষক প্রভৃতি সকলই জানতেন, কিন্তু পড়াশোনা করিবার ছেলে সুরেশ নহেন, পড়ার নামে তাহার গায় জ্বর আসতি, স্কুলে বাড়ীতে সর্ব্বদাই তিনি কিছু না কিছু অকর্ম্ম করিতেন। দাঙ্গা হাঙ্গামা করিবেন, না পড়া শোনা করিবেন। মাষ্টারেরা হার মানিয়াছেন, তাঁহার পিতা তাঁহাকে দুই চক্ষে দেখিতে পারেন না, বাটীর কেহই তাঁহাকে দেখিতে পারিত না। এই সময়ে তাঁহার খুল্লতাত কৈলাসচন্দ্র বিশ্বাসের সহিতই তাঁহার সম্প্রীতি ছিল, আর কেহ তাঁহাকে দেখিতে পারিত না। তিনিও কাহাকে দেখিতে পারিতেন না। সুরেশের পিতা এখন জীবিত আছেন। তিনি নাথপুরে থাকিয়া ধর্মালোচনায় কালাতিপাত করেন, তাঁহার খুল্লতাত কৈলাস বাবুও জীবিত আছেন। তিনি এক্ষণে পেনসন লইয়া কড়েয়ায় বাড়ীতে আনে। সুরেশ এ পর্যন্ত বরাবরই কৈলাস বাবুর নিকট চিঠিপত্র লিখিয়া থাকেন।