পাতা:লেফ্‌টেন্যাণ্ট সুরেশ বিশ্বাস.djvu/৯৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
খ্রীষ্টধর্ম্মে দীক্ষা।
৭৫

 উদ্ধত ও উচ্ছৃঙ্খল সুরেশ পিতার তাড়নায় ক্ষিপ্ত প্রায় হইয়া উঠিলেন। বালককাল হইতেই তিনি স্বাধীন চেতা, পরের অধীনে পরের করতলস্থ হইয়া থাকা তাঁহার পক্ষে অসম্ভব; পিতার শাসন তাঁহার পক্ষে অসহ্য হইয়া উঠিল, তিনি আত্মীয় স্বজন এমন কি পিতাকেও ত্যাগ করিয়া সকলের সহিত সম্বন্ধ বিচ্ছিন্ন করিবার জন্য ব্যগ্র হইয়া উঠিলেন। কেবল এক জননী, তাঁহারই স্নেহ বন্ধনে বন্ধ হইয়া সুরেশ এখনও গৃহ ত্যাগ করেন নাই। পিতা কর্ত্তৃক ভর্ৎসিত বা প্রহারিত হইলে তাঁহার স্নেহময়ী জননীই তাঁহাকে কোল দিয়া তাঁহার হৃদয়ে শান্তিবারি প্রদান করিতেন।

 একদিকে পিতা পুত্রকে ত্যজ্যপুত্র করিবার জন্য ক্রমে হৃদয়কে দৃঢ় করিতেছেন, অপরদিকে পুত্রও গৃহ, আত্মীয় স্বজন সমস্ত পরিত্যাগ করিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হইতেছেন; এরূপ গৃহবন্ধন আর কয়দিন রহে? একদিন পিতা পুত্রে মহা কলহ উপস্থিত হইল, পুত্র আর সহ্য করিতে পারিলেন না; আর জীবন থাকিতে গৃহে ফিরিবেন না প্রতিজ্ঞা করিয়া সুরেশ গৃহ হইতে বহির্গত হইলেন। তিনি বরাবর লণ্ডনমিশনস্থ তাঁহার খ্রীষ্টান বহুদিগের নিকট গমন করিলেন। তাঁহাদের নিকট হৃদয় খুলিয়া সকল কথা, প্রাণের সমস্ত কথা, বলিলেন। তাঁহার যেরূপ মনের ভাব, বন্ধুগণও ঠিক সেই ভাব ব্যক্ত করিলেন। দুর্ব্বলতা কিছুই নহে, যাহার হৃদয়ে বল নাই, তাহার কিছুই নাই, কোন ক্রমেই আর তাঁহার অন্ততঃ উপস্থিত কিয়ৎদিন বাড়ী যাওয়া কর্ত্তব্য নহে,—তাঁহার বন্ধুগণ সকলেই তাঁহাকে এই পরামর্শ দিলেন। সুরেশের প্রাণে