পাতা:লোকসাহিত্য - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১১৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

লোকসাহিত্য وی به نام যায় না। এ-সমস্ত ভাবের স্বষ্টি । কৃষ্ণরাধার বিরহ-মিলন সমস্ত বিশ্ববাসীর বিরহমিলনের অাদর্শ ; ইহার মধ্যে ভারতবর্ষীয় ব্রাহ্মণসমাজ বা মনুসংহিতা নাই ; ইহার আগাগোড়া রাখালি কাণ্ড । যেখানে সমাজ বলবান সেখানে বৃন্দাবনের গোচারণের সঙ্গে মথুরার রাজ্যপালনের একাকার হওয়া অত্যন্ত অসংগত। কিন্তু কৃষ্ণরাধার কাহিনী যে ভাবলোকে বিরাজ করিতেছে সেখানে ইহার কোনো কৈফিয়ৎ আবশ্যক করে না। এমন-কি, সেখানে চিরপ্রচলিত সমস্ত সমাজপ্রথাকে অতিক্রম করিয়া বৃন্দাবনের রাখালবৃত্তি মথুরার রাজত্ব অপেক্ষা অধিকতর গৌরবজনক বলিয়া সপ্রমাণ হইয়াছে। আমাদের দেশে, যেখানে কর্মবিভাগ শাস্ত্রশাসন এবং সামাজিক উচ্চনীচতার ভাব সাধারণের মনে এমন দৃঢ় বদ্ধমূল, সেখানে কৃষ্ণরাধার কাহিনীতে এই-প্রকার আচারবিরুদ্ধ বন্ধনবিহীন ভাবের স্বাধীনতা যে কত বিস্ময়কর তাহা চিরাভ্যাসক্রমে আমরা অতুভব করি না । * কৃষ্ণ মথুরায় রাজত্ব করিতে গেলে রাধিক কাদিয়া কহিলেন— আর কি এমন ভাগ্য হবে, ব্রজে আসবে হরি । সে গিছে মথুরাপুরী, মিথ্যে আশা করি । , রাজাকে পুনরায় রাখাল করিবার আশা দুরাশা, এ কথা সকলকেই স্বীকার করিতে হইবে । কিন্তু, বৃন্দা বৃন্দাবনের আসল কথা বোঝে, সে জানে নিরাশ হইবার কোনো কারণ নাই। সে জানে, বৃন্দাবন-মথুরায় কাশী-কাঞ্চীর নিয়ম ঠিক খাটে না । বুন্দে বলে অামি যদি এনে দিতে পারি তবে মোরে কী ধন দিবে বল তো কিশোরী ॥ শুনে বাণী কমলিনী যেন পড়িল ধন্দে— দেহপ্রাণ করেছে দান কৃষ্ণপদণরবিন্দে ॥