পাতা:লোকসাহিত্য - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

२ ● লোকসাহিত্য বলিয়। দিবার জন্ত পাড় তোলপাড় করিয়া তুলিয়াছিল। এই তো তিন ছড়ার মধ্যে অসংগতি । তার পর প্রত্যেক ছড়ার নিজের মধ্যেও ঘটনার ধারাবাহিকতা দেখা যায় না। বেশ বুঝা যায়, অধিকাংশ কথাই বানানো। কিন্তু ইহাও দেখিতে পাই, কথা বানাইতে গেলে লোকে প্রমাণের প্রাচুর্ধ-দ্বারা সেটাকে সত্যের অপেক্ষা অধিকতর বিশ্বাসযোগ্য করিয়া তোলে, অথচ এ ক্ষেত্রে সে পক্ষে খেয়ালমাত্র নাই। ইহাদের কথা সত্যও নহে, মিথ্যাও নহে ; দুইয়ের বার। ঐ-যে ছড়ার এক জায়গায় স্ববলের বিবাহের উল্লেখ আছে সেটা কিছু অসম্ভব ঘটনা নহে। কিন্তু সত্য বলিয়াও বোধ হয় না। দাদা দাদা ডাক ছাড়ি, দাদা নাইকে বাড়ি । সুবল সুবল ডাক ছাড়ি, সুবল অাছে বাড়ি ॥ যেমনি স্ববলের নামটা মুখে আসিল অমনিই বাহির হইয়া গেল, “আজি সুবলের অধিবাস, কাল স্ববলের বিয়ে । সে কথাটাও স্থায়ী হইল না, অনতিবিলম্বেই দিগনগরের দীর্ঘকেশ মেয়েদের কথা উঠিল। স্বপ্নেও ঠিক এইরূপ ঘটে । হয়তো শব্দসাদৃপ্ত অথবা অন্য কোনো অলীক তুচ্ছ সম্বন্ধ অবলম্বন করিয়া মুহূর্তে মুহূর্তে একটা হইতে আর-একটা কথা রচিত হইয়া উঠিতে থাকে। মুহূর্তকাল পূর্বে তাহাদের সম্ভাবনার কোনোই কারণ ছিল না, মুহূর্তকাল পরেও তাহারা সম্ভাবনার রাজ্য হইতে বিনা চেষ্টায় অপস্থত হইয়া যায়। স্ববলের বিবাহকে যদি বা পাঠকগণ তৎকালীন ও তৎস্থানীয় কোনো সত্য ঘটনার আভাস বলিয়া জ্ঞান করেন তথাপি সকলেই একবাক্যে স্বীকার করিবেন ‘নাল গামছা দিয়ে টিয়ের মার বিয়ে’ কিছুতেই সাময়িক ইতিহাসের মধ্যে স্থান পাইতে পারে না। কারণ, বিধবাবিবাহ টিয়ে-জাতির মধ্যে প্রচলিত থাকিলেও নাল গামছার ব্যবহার উক্ত সম্প্রদায়ের