পাতা:শকুন্তলা (ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর).djvu/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শকুন্তলা
১০৭

এই বলিয়া শকুন্তলার চক্ষে ধারা বহিতে লাগিল। রাজা গাত্রোত্থান করিয়া বাষ্পপূর্ণ নয়নে কহিতে লাগিলেন প্রিয়ে! প্রত্যাখ্যান কালে তোমার নয়নযুগল হইতে যে জলধারা বিগলিত হইয়াছিল,তাহা উপেক্ষা করিয়াছিলাম; পরে সেই দুঃখে আমার হৃদয় বিদীর্ণ হইয়া গিয়াছিল। এক্ষণে তোমার চক্ষের জলধারা মুছিয়া দিয়া সকল দুঃখ দূর করি। এই বলিয়া স্বহস্তে শকুন্তলার চক্ষের জল মুছিয়া দিলেন। শকুন্তলার শোকসাগর আরো উথলিয়া উঠিল; দ্বিগুণ প্রবাহে নয়নে বারিধারা বহিতে লাগিল।

 অনন্তর, দুঃখাবেগ নিবারণ করিয়া, শকুন্তলা রাজাকে কহিলেন আর্য্যপুত্র! তুমি যে এই দুঃখিনীকে পুনর্ব্বার স্মরণ করিবে সে প্রত্যাশা ছিল না। অতএব কি রূপে আমি পুনরায় তোমার স্মৃতিপথে পতিত হইলাম ভাবিয়া স্থির করিতে পারিতেছি না। তখন রাজা কহিলেন প্রিয়ে! তৎকালে তুমি আমাকে যে অঙ্গুরীয় দেখাইতে পার নাই, কয়েক দিবস পরে উহা আমার হস্তে পড়িলে, আদ্যোপান্ত সমস্ত বৃত্তান্ত আমার স্মৃতিপথে আরূঢ় হয়। এই সেই অঙ্গুরীয়। এই বলিয়া, স্বীয় অঙ্গুলিস্থিত সেই অঙ্গুরীয় দেখাইয়া,পুনর্ব্বার শকুন্তলার অঙ্গুলীতে পরাইয়া দিবার চেষ্টা করিলেন। তখন শকুন্তলা কহিলেন আর্য্য-