পাতা:শকুন্তলা (ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর).djvu/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪
শকুন্তলা

লম্বন পূর্ব্বক নিয়ত বনে বনে ভ্রমণ করিবে। আমি ব্রাহ্মণের সন্তান; সর্ব্বদা মৃগের অনুসরণে কাননে কাননে ভ্রমণ করিয়া সন্ধিবন্ধ সকল শিথিল হইয়া গিয়াছে এবং সর্ব্ব শরীর অবশ হইয়া রহিয়াছে। অতএব বিনয় বাক্যে প্রার্থনা করিতেছি অন্ততঃ এক দিনের মত আমাকে বিশ্রাম করিতে দাও।

 রাজা মাধব্যের প্রার্থনা শুনিয়া মনে মনে কহিতে লাগিলেন এ ত এইরূপ কহিতেছে; আমারও শকুন্তলা দর্শন দিবসাবধি মৃগয়া বিষয়ে মন নিতান্ত নিরুৎসুক হইয়াছে। শরাসনে শর সন্ধান করি কিন্তু মৃগের উপরি নিক্ষেপ করিতে পারি না; যেহেতু, তাহাদিগের মুগ্ধ নয়ন অবলোকন করিলে, শকুন্তলার সেই অলৌকিক বিভ্রম বিলাসশালী নয়নযুগল মনে পড়ে। মাধব্য রাজার মুখে দৃষ্টি পাত করিয়া কহিলেন ইনি ত আর কিছু মনে করিয়া ভাবিতে লাগিলেন আমি অরণ্যে রোদন করিলাম। রাজা ঈষৎ হাস্য করিয়া কহিলেন না হে না, আমি অন্য কিছু ভাবিতেছি না; সুহৃদ্বাক্য লঙ্ঘন করা কর্ত্তব্য নহে এই বিবেচনায় অদ্য মৃগয়ায় ক্ষান্ত হইলাম। মাধব্য, শ্রবণ মাত্র যৎপরোনাস্তি আনন্দিত হইয়া, চিরজীবী হও বলিয়া, চলিয়া যাইবার উদ্যম করিলেন। রাজা কহিলেন বয়স্য!